হযরত ইয়াহয়া (আ) এর মৃত্যুর ঘটনা এবং সূরা সাজদাহ ও মুলকের বরকত

দারুস সাআদাত গ্রন্থ

গ্রন্থঃ  আশা বাদাল মাউত – মৃত্যুর পর জীবন

লেখকঃ ইমাম ইবনে আবিদ দুনইয়া (রহ)

স্বত্বঃ সাআদাত কর্তৃক সংরক্ষিত

৪৯ পৃষ্ঠার এই pdf টির মূল্য ৩০ টাকা। আপনার কপির জন্য কল করুন অথবা Whtsapp করুন এই নং এ- 01961810343 pdf whatsapp এ দেওয়া হবে।

ইয়াহয়া (আ) এর মৃত্যুর ঘটনা

রিওয়ায়াতঃ৪৪– হযরত সাঈদ ইবনে জুবায়র হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন। ‎হযরত ইসা (আ) তার বারজন হাওয়ারীকে ইয়াহইয়া (আ) এর সাথে প্রেরণ করেন ‎যে, তারা লোকদেরকে তালীম দান করবেন। তারা লোকদেরকে (অন্যান্য তালীমসহ) ‎নিজেদের ভাগ্নীর সাথে বিবাহ করতে নিষেধ করলেন। (সেই সময়ের) বাদশাহর ভাগ্নী ‎বাদশাহকে পছন্দ করত। আর বাদশাহও তাকে বিবাহ করার ইচ্ছা পোষণ করত। সে ‎প্রতিদিন তার কোন না কোন ইচ্ছা পূরণ করত।

যখন এই সংবাদ তার মায়ের নিকট ‎পৌঁছল যে, তারা নিজেরে ভাগ্নীকে বিবাহ করতে নিষেধ করছেন, তখন তিনি তার ‎মেয়েকে বললেন, যখন তুমি বাদশাহর কাছে যাবে এবং তিনি তোমাকে তোমার কোন ‎ইচ্ছা পূরণের কথা জিজ্ঞাসা করবেন, তখন তুমি বলবে যে, আমি চাই যে, ইয়াহইয়া ‎বিন যাকারিয়া (আ)-কে যবেহ করে দেওয়া হোক। যখন সে বাদশাহর কাছে গেল ‎এবং বাদশাহ তাকে জিজ্ঞাসা করল তোমার কি ইচ্ছা? সে বলল, আমি চাই যে, ‎ইয়াহইয়া বিন যাকারিয়াকে যবেহ করে দেয়া হোক।

বাদশাহ বলল, এটা ব্যতীত অন্য ‎কিছু বল। মেয়েটি বলল যে, আমি তো শুধু এটিই চাই। যখন সে জিদ ধরল তখন ‎বাদশাহ অনেক বড় একটি তামার বর্তন আনালেন এবং ইয়াহইযা বিন যাকারিয়া (অ)-‎কেও ডাকলেন আর তাকে যবেহ করে দিলেন। তার রক্তের একটি ফোটা যমীনে পড়ে ‎টগবগ করতে লাগল (এবং অনবরত টগবগ করতে লাগল) যে পর্যন্ত না আল্লাহ তাআলা তাদের মধ্যে বুখত নসরকে প্রেরণ ‎করেন। তিনি তার অন্তরে এই ইচ্ছা জাগিয়ে দেন যে, এই রক্তের বিনিময়ে তিনি ‎তাদের মধ্যে হত্যা জারী রাখবেন যে পর্যন্ত না তা শান্ত হয়। তিনি তাদের মধ্যে সত্তর ‎হাজার লোকে কতল করেন (তারপর সেই রক্তের ধারা বন্ধ হয়)। ‎

অপর এক বর্ণনা

রিওয়ায়াতঃ৪৫ শাহর বিন হাওশাব বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, যখন বাদশা ইয়াহয়া (আ)-কে ‎হত্যা করেন তখন তিনি তার মাথা মোবারক তার ভাগ্নির নিকট অর্পণ করেন। ‎অতঃপর মেয়েটি সোনার পাত্রে করে মাথাটি তার মাকে উপহার দেন। ঐ সময় পাত্রের ‎মধ্য থেকে তার মাথাটি বলে উঠল, না এই মেয়ে বাদশার জন্য হালাল, আর না বাদশাহ ‎তার জন্য হালাল। যখন তার মা তার মাথাটি দেখল তখন বলল যে, আজ আমার চোখ ‎ঠান্ডা হল এবং আমি বাদশাহর উপর ইমান আনলাম।

অতঃপর সে রেশমী পোষাক ‎পরিধান করে মহলের ছাদের উপর উঠল। মহিলাটি কিছু কুকুর পালন করত যাদের ‎সামনে মানুষের মাংস পেশ করা হত। মহিলাটি মহলের দিকে চলতে লাগল। এমন ‎সময় আল্লাহ তাআলা প্রবল বায়ূ প্রেরণ করলেন, ফলে (বাতাসে) মহিলাটির কাপড় জড়িয়ে সে ‎ছাদ থেকে কুকুরের সামনে গিয়ে পতিত হল। কুকরগুলো তাকে  আঁচড় দেওয়া শুরু ‎করল আর সে নিরুপায় হয়ে তাকিয়ে রইলো। কুকুরগুলো তার চোখ উপড়ে ফেললো ‎ও (তাকে ছিন্নভিন্ন করে ফেলল)। ‎

সূরা সাজদাহ ও মুলকের বরকত

রিওয়ায়াতঃ৪৬– হাসান বিন দীনার বর্ণনা করেন। সাবিত আল বুনানী এবং অপর এক ব্যক্তি ‎আব্দুল্লাহ বিন শিখখীর (রহ)-কে তার অসুস্থাবস্থায় দেখতে গেলেন। তারা তাকে অজ্ঞান ‎অবস্থায় পেলেন। বর্ণনাকারী বলেন, তার উপর নূরের তিটি আলো প্রষ্ফুটিত হল। ‎একটি মাথার দিকে, একটি নাভীর দিকে, আরকেটি পায়ের দিকে। এটা আমাদের জন্য ‎নতুন একটি বিষয় ছিল। যখন সে জ্ঞান ফিরে পেল তখন আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, হে ‎আব্দুল্লাহ! কেমন আছ? আমরা একটি নতুন বিষয় দেখেছি। সে জিজ্ঞাসা করল, কি ‎দেখেছ? আমরা তাকে সব বললাম।

সে বলল, তোমরা এসব দেখেছ? আমরা বললাম ‎হ্যাঁ। সে বলল এটা সূরা সাজদাহর বরকত ও নূর ছিল যার মধ্যে ২৯ টি আয়াত আছে। ‎এই সূরার প্রথম আয়াতের নূর আমার মাথা থেকে বের হয়। মাঝের আয়াতের নূর ‎আমার নাভী থেকে বের হয়। আর শেষ আয়াতসমুহের নূর আমার পায়ের দিক থেকে ‎বের হয়। এটা উপরে গিয়ে আমার শাফাআত করবে। (আর) এই সূরা তাবারাকা (সূরা ‎মুলক) আমার হিফাযত করবে। এরপর তার মৃত্যু হয়ে যায়। আল্লাহ তার প্রতি ‎রহম করুন।

রিওয়ায়াতঃ৪৭- মুআররাক আজালী (রহ) বলেন, আমরা এমন এক রোগীর সেবা করলাম, যে ‎অজ্ঞান পড়ে ছিল। (হঠাৎ) তার মাথা থেকে একটি নূর বের হয়ে ছাদ ভেদ করে ‎আকাশের দিকে চলে গেল। অতঃপর আরেকটি নূর তার নাভী থেকে বের হল এবং ‎আকাশের দিকে চলে গেল। অতঃপর আরেকটি নূর তার পায়ের দিক থেকে বের হল ‎এবং আকাশের দিকে চলে গেল। যখন তার জ্ঞান ফিরল তখন আমরা জিজ্ঞাসা ‎করলাম যে, তুমি কি জান যে, তোমার থেকে কি বের হয়েছে?

সে বলল, শুন! যে ‎আলো আমার মাথা থেকে বের হয়েছে তা ছিল সূরা সাজদার প্রথম ১৪ আয়াত। যা ‎নাভী থেকে বের হয়েছে তা ছিল (ঐ সূরার) সাজদার আয়াত। আর যেই আলো ‎আমার পা থেকে বের হয়েছে তা ছিল সূরা সাজদার শেষের আয়াতসমূহ। এটা উপরে ‎গিয়ে আমার জন্য শাফাআত করবে। আর সূরা তাবারাকা (মুলক) আমার পাশে আছে ‎যা আমার হিফাযত করবে। আমি প্রতি রাতে এই সূরা দুটির তিলাওয়াত করে থাকি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button
error: Content is protected !!