গ্রন্থস্বত্ব প্রসঙ্গে

গ্রন্থস্বত্ব প্রসঙ্গে

দারুস সাআদাত একটি অনলাইন ভিত্তিক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। ২০১৭ সাল থেকে এর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মূলত প্রথমে অনলাইন এবং পরে মুদ্রণ করা এই ভিত্তিতে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু কিছু অসাধু লোকদের দৌড়াত্বে আমাদের অনলাইন কার্যক্রমকে শিথিল করতে বাধ্য হচ্ছি। কারণ কিছু লোক প্রথমে আমাদের রেফারেন্স ব্যতীতই আমাদের text content (pdf ব্যতীত) কপি করে প্রকাশ করতো। আবার কেউ একটি গ্রন্থের এপ তৈরী করে প্রকাশ করেছে। আবার কিছু লোক বারবার নাম পরিবর্তন করে ইমেইল বা whatsapp এ বিরক্ত করতে থাকে। তদুপরি হ্যাকারদেরও দৌড়াত্ব রয়েছে।

ইমাম ইবনে আবিদ দুনইয়া (রহ) রচিত ‘আল উকুবাত’ গ্রন্থটি আমরা ২০১৭ সালে শাস্তি ও বিপর্যয় শিরোনামে ধারাবাহিকভাবে অনুবাদ শুরু করি এবং ১০১ পর্যন্ত অনুবাদ করে pdf সহ প্রকাশ করি। বাকী কাজ স্থগিত রাখি। তবে গত বছর থেকে বাকী কাজগুলোও ধারাবাহিকভাবে শুরু করা হয় এবং আমাদের ওয়েবসাইটে ধারাবাহিকভাবে কিছু অংশ প্রকাশ করা হয়।

কিন্তু দুঃখজনত হলেও সত্যি যে, সম্প্রতি  দরুল অরকাম নামে এক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান আল উকূবাত গ্রন্থটি ‘শাস্তি ও বিপর্যয়; কেন আসে? প্রতিকার কি?’ নামে প্রকাশ করে। গ্রন্থটি আমাদের হাতে আসলে আমরা দেখতে পাই যে, গ্রন্থটির ১-১০১ পর্যন্ত রিওয়াতগুলো আমাদের গ্রন্থেরই হুবুহ কপি করা। শুধুমাত্র দুই একটি শিরোনাম অদল-বদল, নবী (সা) এর স্থলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লেখা এবং রেফারেন্স এ কিছু অদল-বদল। বাকী কোন কিছুর পরিবর্তন নেই। মূল শিরোনামও প্রায় এক। বিষয়টি আমাদের মর্মাহত ও ব্যথিত করেছে। সম্ভবত এটা অনুবাদকের কাজ। এহেন অনুচিত কাজ করা করা এবং কোন প্রকাশকের জন্য তা প্রশ্রয় দেয়া মোটেও ঠিক নয়। 

আমরা আমাদের চলমান গ্রন্থটির অনুবাদ সমাপ্ত হলে pdf  প্রকাশ ও গ্রন্থ মুদ্রণ করব। তাই পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে কোন ঝামেলা যাতে না হয় তার জন্য বিষয়টি এখানে প্রকাশ করছি। আর উক্ত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান থেকেও আশা করছি যে, বিষয়টির কোন সমাধান করার। 

আমরা উকীলের সাথেও কথা বলেছি। ভবিষ্যতে কেউ যদি আমাদের কোন content বিনানুমতিতে বা অন্যায়ভাবে ব্যবহার করেন, তবে তার জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর যারা এ পর্যন্ত কোন কন্টেন্ট ব্যবহার করে থাকেন তারা অতিসত্বর তা মুছে ফেলবেন। অন্যথায় তাদের প্রতিও কর্তৃপক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। 

ইলম এর আসল উদ্দেশ্য তাকওয়া ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জন। এখন কেউ যদি এটাকেই সামান্য কয়টা টাকার জন্য বা নামের জন্য অন্যায়ভাবে ব্যবহার করেন তবে তার এই ইলমই আযাবের কারণ হবে, দুনিয়াতেও লাঞ্ছনা আসবে। সর্বোপরি আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতা তো রয়েছে।

গ্রন্থস্বত্বের গুরুত্ব 

লেখকের রচিত বা অনুদিত গ্রন্থ তার নিজস্ব বৃদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ। ইসলামী আইনে এবং দুনিয়ার আইনেও তা অন্যায়ভাবে ভোগ দখল করা কারো জন্য বৈধ নয়। দুনিয়ার আইনেও এমন কেউ করলে তার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণসহ মামলা করার ব্যবস্থা আছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন-

يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَأْكُلُوا أَمْوَالَكُمْ بَيْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ

হে ইমানদারগণ তোমরা পরস্পরের মধ্যে তোমাদের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ-দখল করো না।- সূরা নিসা ২৯

রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন,

أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ

সাবধান! কারো মাল সম্পদ তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়।–মিশকাত ২৯৪৬

রাসূলুল্লাহ (সা) আরো ইরশাদ করেন,

يَأْتِي عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ، لاَ يُبَالِي المَرْءُ مَا أَخَذَ مِنْهُ، أَمِنَ الحَلاَلِ أَمْ مِنَ الحَرَامِ

এমন এক যুগ আসবে যখন মানুষ পরোয়া করবে না যে, সে কোথা হতে সম্পদ উপর্জন করল, হালাল হতে না হরম হতে।- বুখারী ২০৫৯

আল্লাহ আমাদের সকলকে সঠিক বুঝ দান করুন।

       

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button
error: Content is protected !!