আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলি-ইবনুস সুন্নী (রহ)
দিবা-রাতের আমলসমূহ
দারুস সাআদাত গ্রন্থ
গ্রন্থঃ আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলি
লেখকঃ আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলি-ইবনুস সুন্নী (রহ)
অনুবাদঃ দারুস সাআদাত কর্তৃক অনূদিত
স্বত্বঃ দারুস সাআদাত কর্তৃক সংরক্ষিত
আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলি
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
بَابُ حِفْظِ اللِّسَانِ وَاشْتِغَالِهِ بِذِكْرِ اللَّهِ تَعَالَى
যবানের হিফাযত করা এবং যবানকে আল্লাহর যিকিরে নিয়োজিত রাখা প্রসঙ্গে
১.হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা) বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন-
إِذَا أَصْبَحَ ابْنُ آدَمَ، فَإِنَّ الْأَعْضَاءَ تُكَفِّرُ اللِّسَانَ وَتَقُولُ: اتَّقِ اللَّهَ فِينَا، فَإِنِ اسْتَقَمْتَ اسْتَقَمْنَا، وَإِنِ اعْوَجَجْتَ اعْوَجَجْنَا
মানুষ যখন ভোর করে তখন তার সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ তার নিকট অনুনয় বিনয় করে বলে, আমাদের কার্যাবলীর ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর কেননা আমাদের কার্যাবলী তোমার সাথে সম্পৃক্ত। যদি তুমি ঠিক থাক তবে আমরাও ঠিক থাকব। আর যদি তুমি বিগড়ে যাও তবে আমরাও বিগড়ে যাব।
২.হযরত মুআয (রা) বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) এর সাথে পৃথক হওয়ার সময় শেষ যে কথাটি জিজ্ঞাসা করেছিলাম তা ছিল, আমি আরয করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে বলুন যে, আল্লাহর নিকট আমলসমূহের মধ্যে কোন আমল সবচেয়ে উত্তম? তিনি (সা) ইরশাদ করলেন যে,
أَنْ تَمُوتَ وَلِسَانُكَ رَطْبٌ مِنْ ذِكْرِ اللَّهِ تَعَالَى
এই অবস্থায় তোমার মৃত্যু হওয়া যে, তোমার যবান আল্লাহর যিকির দ্বারা সিক্ত থাকবে।
৩.হযরত মুআয ইবনে জাবাল (রা) বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন-
لَيْسَ يَتَحَسَّرُ أَهْلُ الْجَنَّةِ عَلَى شَيْءٍ إِلَّا عَلَى سَاعَةٍ مَرَّتْ بِهِمْ لَمْ يَذْكُرُوا اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ فِيهَا
জান্নাতে প্রবেশের পর জান্নাতীদের দুনিয়ার কোন বিষয়ে আফসোস হবে না, শুধুমাত্র ঐ সময়টুকু ব্যতীত যে সময়টুকুতে আল্লাহর যিকির করা হয়নি।
৪.হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন-
أَكْثِرُوا ذِكْرَ اللَّهِ تَعَالَى حَتَّى يُقَالَ مَجْنُونٌ
আল্লাহ তাআলার যিকির বেশী করে কর। এমনকি লোকেরা যেন বলে পাগল।
৫. হযরত উম্মে হাবীবা- রাসূলুল্লাহ (সা) এর সহধর্মিনী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন-
لَامُ ابْنِ آدَمَ كُلُّهُ عَلَيْهِ لَا لَهُ، إِلَّا أَمْرٌ بِمَعْرُوفٍ، أَوْ نَهْيٌ عَنْ مُنْكَرٍ، أَوْ ذِكْرُ اللَّهِ تَعَالَى
আদম সন্তানের প্রতিটি কথা তার জন্য ক্ষতির কারণ, তবে শুধুমাত্র নেক কাজের আদেশ, অসৎকাজে নিষেধ এবং আল্লাহর যিকির ব্যতীত।
৬.হযরত আবু যার (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন-
مَنْ حَسَبَ كَلَامَهُ مِنْ عَمَلِهِ، قَلَّ كَلَامُهُ إِلَّا فِيمَا يَعْنِيهِ
যে ব্যক্তি নিজের কথা বলাকেও একটা আমল হিসাবে গণ্য করে, তবে তার কথা প্রয়োজনের চেয়ে কম হয়ে যাবে।
৭.হযরত আসলাম (রহ) বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, হযরত উমর (রা) জানতে পারলেন যে, হযরত আবু বকর স্দিদীক (রা) তার জিহ্বা ধরে টানছেন। তখন উমর (রা) জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূলের খলীফা! আপনি কি করছেন? তিনি বললেন, এই যবান আমাকে ধ্বংসের স্থানে নিয়ে পৌঁছিয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেছেন-
لَيْسَ شَيْءٌ مِنَ الْجَسَدِ إِلَّا وَهُوَ يَشْكُو ذَرْبَ اللِّسَانِ
শরীরের প্রতিটি অঙ্গ যবানের তীক্ষ্ণতার অভিযোগ করে।
ইবনে আশকাব বলেন, অর্থাৎ আল্লাহর নিকট দ্রুত যবান চলার অভিযোগ করে।