তাফসীর আদ দুররে মানসূর- সূরা আল বাকারা ১৫৫
وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَيْءٍ مِنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِنَ الْأَمْوَالِ وَالْأَنْفُسِ وَالثَّمَرَاتِ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ (155) الَّذِينَ إِذَا أَصَابَتْهُمْ مُصِيبَةٌ قَالُوا إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ (156) أُولَئِكَ عَلَيْهِمْ صَلَوَاتٌ مِنْ رَبِّهِمْ وَرَحْمَةٌ وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُهْتَدُونَ (157)
১৫৫আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কোন একটি বিষয়ের সাথে- ভয়, ক্ষুধা, জান, মাল ও ফল ফসলের ক্ষতি দ্বারা। ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।
১৫৬.যখন তাদের উপর বিপদ আপতিত হয় তখন বলে, নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য আর নিশ্চিত আমরা তার দিকে ফিরে যাব।
১৫৭.এরাই তারা যাদের প্রতি তাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে অনুগ্রহ ও রহমত বর্ষিত হয় আর এরাই সুপথপ্রাপ্ত।
ইমাম সুফিয়ান ইবনে উয়াইনাহ, আব্দ ইবনে হুমায়দ, ইবনুল মুনযির, ইবনে আবী হাতিম এবং বায়হাকী শুআবুল ইমানে- হযরত জোয়াইবির থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি হযরত যাহহাক (রহ) এর নিকট পত্র দিয়ে এই আয়াত إِنَّا لله وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُون প্রসঙ্গে জানতে চাইল যে, এটা কি খাস না আম? যাহহাক (রহ) বলরেন, প্রত্যেক ঐ ব্যক্তির জন্য যে তাকওয়া অবলম্বন করে এবং ফরযসমূহ আদায় করে।
ইমাম আব্দ হুমায়দ, ইবনে জারীর, ইবনুল মুনযির, ইবনে আবী হাতিম, রাজা বিন হায়ওয়াহ থেকে وَنقص من الثمرات প্রসঙ্গে বর্ণনা করেন যে, লোকদের উপর এমন সময়ও আসে যে, খেজুর গাছে ফল আসে না একটা খেজুর ব্যতীত।
ইমাম তাবরানী, ইবনে মারদুবিয়াহ হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন, আমার উম্মতকে এমন একটি জিনিস দেয়া হয়েছে যা অন্য কোন উম্মতকে দেওয়া হযনি। আর তা হল মুসীবতের সময় ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পাঠ করা।
ইমাম ওকী, আব্দ ইবন হুমায়দ, ইবনে জারীর, বায়হাকী শুআবুল ইমানে- হযরত সাঈদ ইবনে জুবায়র থেকে বর্ণনা করেন। মুসীবতের সময় এই উম্মতকে এমন একটি জিনিস দেয়া হয়েছে, যা তাদের পূর্বে নবীদেরকেও দেয়া হয়নি। যদি নবীদেরকে তা দেয়া হত তবে ইয়াকুব (আ)-কে দেয়া হত কেননা তিনি বলেছিলেন
يَا أسفى على يُوسُف
আফসোস! ইউসুফের জন্য।– সূরা ইউসুফ ৮৪
ইমাম ইবনে আবিদ দুনইয়া আল আযায়- হযরত আলী (রা) থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন, যে মুসীবতে সবর করবে এমনকি উত্তম শোক (ধৈর্য) দ্বারা তা ফিরিয়ে দিবে তবে আল্লাহ তাআলা তার জন্য তিনশত মর্যাদা লিখে দিবেন এবং প্রত্যেক দুই মর্যাদার মাঝে আসমান ও যমীনের ব্যবধান হবে।
ইমাম ইবনে আবিদ দুনইয়া আল আযায় ইউনুস বিন ইয়াযিদ থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি রবিয়া বিন আব্দুর রহমান কে জিজ্ঞাসা করলাম, সবরের চূড়ান্ত সীমা কি? তিনি বললেন, তুমি মুসীবতের দিন তেমনই থাক যেমন মুসীবতের পূর্বে ছিলে।
ইমাম ইবনে আবিদ দুনইয়া আল আযায়– সাইদ ইবনুল মুসায়িব থেকে মারফুরুপে বর্ণনা করেন। যে ব্যক্তি (বিপদের) চল্লিশ বছর পর ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পাঠ করল আল্লাহ তাআলা তাকে মুসীবতের দিনের মত সওয়াব দান করবেন।
ইমাম ইবনে আবিদ দুনইয়া– কাব থেকে বর্ণনা করেন। কোন মানুষের উপর যখন কোন মুসিবত আপতিত হয় এবং চল্লিশ বছর পর সে ঐ মুসিবত স্মরণ করে ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পাঠ করে, তখন আল্লাহ তাআলা ঐ সময়ও এমন প্রতিদান দেন যেভাবে সে মুসিবতের দিন পাঠ করেছিল।
ইমাম আহমদ এবং বায়হাকী শুআবুল ইমানে– হযরত উম্মে সালামা (রা) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আবু সালামা একদিন রাসূলুল্লাহ (সা) এর সাথে দেখা করে আমার নিকট আসল এবং বলল, আজ আমি রাসূলুল্লাহ (সা) এর নিকট থেকে একটি কথা শুনেছি যার কারণে আমি খুব আনন্দিত। তিনি বলেছেন, কোন মুসলমমানের উপর বিপদ আসলে সে যদি ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পাঠ করে অতঃপর বলে
اللَّهُمَّ أجرني فِي مصيبتي وأخلف لي خيرا مِنْهَا
হে আল্লাহ! আপনি আমার এই বিপদে প্রতিদান দিন আর এর পরিবর্তে আমাকে উত্তম বিনিময় দান করুন।
তাহলে আল্লাহ তাআলা এমনই করেন (উত্তম বিনিময় দান করেন)।
উম্মে সালামা (রা) বলেন, আমি দুআটি মুখস্থ করে নিলাম। যখন আবু সালামার মৃত্যু হল তখন আমি (‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’) পাঠ করলাম এবং (অনুরুপ) বললাম।
এরপর আমি বললাম, আমার জন্য আবু সালামা থেকে উত্তম আর কে হতে পারে। (কিন্তু) আল্লাহ তাআলা আমাকে আবু সালামার উত্তম বিনিময় রাসূলুল্লাহ (সা)-কে দান করলেন।
ইমাম মুসলিম– হযরত উম্মে সালামা (রা) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা)-কে এটা বলতে শুনেছি, যখন বান্দা মুসীবতে পড়ে অতঃপর সে পাঠ করে
إِنَّا لله وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُون اللَّهُمَّ أجرني فِي مصيبتي وأخلف لي خيرا مِنْهَا
নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর এবং আল্লাহর দিকে আমাদেরকে ফিরে যেতে হবে। হে আল্লাহ! আপনি আমার এই বিপদে প্রতিদান দিন আর এর পরিবর্তে আমাকে উত্তম বিনিময় দান করুন।
তাহলে আল্লাহ তাআলা এই মুসবিতে তাকে প্রতিদান দেন এবং উত্তম বিনিময় দান করেন।
ইমাম তাবরানী– হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই মৃত্যুর কারণে অস্থিরতা হয়। যখন তোমাদের মাঝে তোমাদের কারো ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ আসে তাহলে তোমাদের পাঠ করা উচিত
إِنَّا لله وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُون وَإِنَّا إِلَى رَبنَا لمنقلبون
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন ওয়া ইন্না ইলা রাব্বিনা লামুনকালিবূন।
নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর এবং আল্লাহর দিকে আমাদেরকে ফিরে যেতে হবে। আমরা আমাদের প্রতিপালকের নিকট অবশ্যই প্রত্যবর্তন করব।
ইমাম তাবরানী যয়ীফ সনদে– হযরত আবু উমামাহ (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা) এর জুতার ফিতা ছিঁড়ে গেলে তিনি ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পাঠ করলেন। সাহাবীগণ আরয করলে, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এটাও কি মুসিবত? তিনি (সা) ইরশাদ করলেন, মুমীনের উপর যে অপছন্দনীয় বিষয়ই আপতিত হয় তা-ই মুসিবত।
ইমাম ইবনে আবিদ দুনইয়া আল আযায়– শহর বিন হাউশাব থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন,
من انْقَطع شسعه فَلْيقل إِنَّا لله وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُون فَإِنَّهَا مُصِيبَة
যার জুতার ফিতা ছিঁড়ে যায় তার ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পাঠ করা উচিত, কেননা এটাও মুসিবত।
ইমাম ইবনে আবী শায়বাহ, ইবনে আবিদ দুনইয়া আউফ বিন আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণনা করেন। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) পথ চলছিলেন। তার জুতার ফিতা ছিঁড়ে গেলে তিনি ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পাঠ করলেন। জিজ্ঞাসা করা হল, এই ধরণের সাধারন বিষয়েরর জন্যও কি ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পড়া যায়? তিনি বললেন, (হ্যাঁ), এটাও মুসিবত।
ইমাম ইবনে আবিদ দুনইয়া– হযরত আব্দুল আযীয বিন আবু দাউদ থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমার নিকট সংবাদ পৌঁছেছে যে, (একবার) বাতি নিভে গেলে নবী (সা) ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পাঠ করলেন এবং বললেন, যা কিছু তোমাকে কষ্ট দেবে তা-ই মুসিবত।
ইমাম আব্দ ইবনে হুমায়দ– হযরত হাসান থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, যখন তোমার জামাতের সাথে নামায ছুটে যায় তখন ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পাঠ কর, কেননা এটাও মুসীবত
ইমাম আব্দ ইবনে হুমায়দ– হযরত সুওয়াদ বিন দাউদ থেকে বর্ণনা করেন। সাঈদ ইবনুল মুসায়িব (রহ) মসজিদে গিয়ে দেখলেন জামাত শেষ হয়ে গিয়েছে। তখন তিনি ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পাঠ করলেন এমনকি এর আওয়ায মসজিদের বাহিরেও শোনা গেল।
ইমাম আব্দুর রাযযাক আল মুসান্নিফে এবং আব্দ ইবনে হুমায়দ– হযরত হাসান থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন, প্রথম আঘাতের সময় ধৈর্যধারণ করাই প্রকৃত ধৈর্য। মানুষ তার চোখের পানির মালিক নয় আর মানুষের মহব্বত তার ভাইয়ের প্রতি (স্বভাবসুলভ)।
ইমাম সাদ– হযরত খায়সামা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, যখন আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) এর নিকট তার ভাই উতবার মৃত্যুর সংবাদ পোঁছল, তখন তার চোখে পানি এসে গেল। তিনি বললেন, এটা আল্লাহর রহমত যা তিনি সৃষ্টি করেছন। মানুষ এর উপর ক্ষমতা রাখে না।
ইমাম আহমদ, আব্দ ইবনে হুমাযদ, বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসাঈ- হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী (সা) এক মহীলাকে তার মেয়ের জন্য কাঁদতে দেখে বললেন, আল্লাহকে ভয় কর এবং সবর কর। মহীলাটি বলল, আমার মুসীবত সম্পর্কে আপনার ধারণা নেই। যখন ঐ মহীলাকে বলা হল ইনি আল্লাহর রাসূল। তখন সে খুব পেরেশান হল এবং নবী (সা) এর দরবারে আসল এবং তার দরবারে কোন দ্বার রক্ষী পেল না। সে আরয করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আপনাকে চিনতে পারিনি। রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, প্রথম আঘাতে ধৈর্যধারণ করাই প্রকৃত ধৈর্য।
ইমাম আব্দ ইবনে হুমায়দ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ এবং বায়হাকী শুআবুল ইমানে– হযরত ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন, যে দুই মুসলমানের (স্বামী-স্ত্রীর) তিনটি বাচ্চা প্রাপ্তবয়ষ্ক হওয়ার পূর্বেই মৃত্যুবরণ করেছে, তারা তাদের জন্য জাহান্নাম থেকে বাঁচার উপায়। আবু যার (রা) বললেন, যার দুটি বাচ্চা মৃত্যবরণ করেছে? তিনি (সা) বললেন, দুটি হলেও। আবুল মুনযির সাইয়্যিদুল কুররা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার একজন বাচ্চা মারা গেছে। রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, একটি হলেও। আর এটি হল প্রথম দুঃখ।
ইমাম বুখারী– হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন, (আল্লাহ তাআলা বলেন,)
مَا لعبدي الْمُؤمن عِنْدِي جَزَاء إِذا قبضت صَفيه من أهل الدُّنْيَا ثمَّ احتسبه إِلَّا الْجنَّة
আমি যখন আমার মুমিন বান্দার কোন প্রিয়তম কিছু দুনিয়া থেকে উঠিয়ে নেই আর সে ধৈর্যধারণ করে, তাহলে আমার জন্য তার কাছে জান্নাত ছাড়া আর কোন প্রতিদান নেই।
ইমাম মালিক মুআত্তায় এবং বায়হাকী শুআবুল ইমানে– হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন, মুমিনের উপর তার সন্তান ও তার প্রয়োজনের উপর বিপদ মুসিবত আসতেই থাকে, এমনকি যখন সে আল্লাহর সাথে মিলিত হয় তখন তার কোন গুনাহই থাকে না।
ইমাম মালিক মুআত্তায়– আবু নাযর আস সুলামী থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন, যে মুসলমানের তিনজন বাচ্চা মৃত্যুবরণ করে আর সে এর উপর সওযাবের নিয়তে সবর করে, তাহলে সে বাচ্চারা তার জন্য জাহান্নাম থেকে অন্তরায় হবে। এক মহীলা বলল, যার দুই বাচ্চা মৃত্যুবরণ করেছে তার কি? তিনি (সা) বললেন, যার দুজন মারা গেছে তারও অনুরুপ।
ইমাম আহমদ হযরত মুআয বিন জাবাল থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন, যে দুই মুসলমানের (স্বামী-স্ত্রীর) তিনজন বাচ্চা মৃত্যুবরণ করে তাহলে আল্লাহ তাআলা এ বাচ্চাদের প্রতি দয়ার্দ্রতার কারণে তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। একজন সাহাবী আরয করলেন, যার দুই বাচ্চা মৃত্যুবরণ করেছে তার কি অনুরুপ? তিনি (সা) বললেন যার দুজন মারা গেছে তারও অনুরুপ। সাহাবী আরয করলেন, যার একজন সন্তান মারা গেছে? তিনি (সা) বললেন, কসম ঐ সত্তার যার হাতে আমার প্রাণ! গর্ভপাতের বাচ্চা নিজের মাকে তার নাড়ী দ্বারা পেঁচিয়ে জান্নাতে নিয়ে যাবে যখন সে সওয়াবের নিয়তে সবর করবে।
ইমাম আহমদ, ইবনে কানে মুজামুস সাহাবায় এবং ইবনে মুনদাহ আল মারিফায়- হাওশাব (রহ) এর মাধ্যমে নবী (সা) থেকে বর্ণনা করেন। নবী (সা) ইরশাদ করেন, যার বাচ্চা মৃত্যুবরণ করেছে, আর সে এর উপর ধৈর্যধারণ করেছে, আর তার উদ্দেশ্য ছিল আল্লাহর সন্তুষ্টি, তাহলে তাকে বলা হবে যে, জান্নাতে প্রবেশ কর তার ফযলে যা আমি তোমার থেকে নিয়েছি।
ইমাম নাসাঈ– হযরত ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন, পৃথিবীর কোন প্রিয়জন মারা যাওয়ার পর যখন মুমিন ব্যক্তি ধৈর্যধারণ করে এবং সওয়াবের আশা রাখে তখন আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাত ছাড়া অন্য কোন প্রতিদান দিয়ে সন্তুষ্ট হন না।
ইমাম ইবনে সাদ– মুতারিফ ইবনে আব্দুল্লাহ শিখখীর থেকে বর্ণনা করেন যে, তার ছেলে আব্দুল্লাহ মৃত্যুবরণ করলে ভাল পোষাক পড়ে চুল আচঁড়িয়ে (পরিপাটি হয়ে) বাহিরে আসেন। তাকে এই মুহুর্তে এমন সজ্জার কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা দুটি মুসীবতরে জন্য তিনটি জিনিসের ওয়াদা করেছেন। অর প্রত্যেকটি জিনিস আমার পুরো দুনিয়া থেকে উত্তম। আল্লাহ তাআল ইরশাদ করেছেন-
{الَّذين إِذا أَصَابَتْهُم مُصِيبَة} إِلَى قَوْله {المهتدون}