মান আ’শা বা’দাল মাউত-মৃত্যুর পর জীবন- ইমাম ইবনে আবিদ দুনইয়া (রহ)

মান আ’শা বা’দাল মাউত- মৃত্যুর পর জীব

ইমাম ইবনে আবিদ দুনইয়া (রহ)

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

এক মায়ের দুআয় মৃত সন্তান জীবিত হওয়া

১. আনাস (রা) বলেন। একবার এক সফরে আমার সাথে একজন আনসারী যুবক ছিল। হঠাৎ সে মারা গেল। আমরা তার চোখ বন্ধ করে দিলাম আর তাকে কাফনের কাপড় পড়িয়ে দিলাম। আমাদের এক সাথি তার মাকে সংবাদ দিল যে, তোমার ছেলে এই দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়ে গেছে। তার মা বলল, সে মরে গেছে? আমরা বললাম হ্যাঁ। তার মা বলল, তোমরা যা বলছ তা কি সত্যি? আমরা বললাম হ্যাঁ। তখন সে আসমানের দিকে হাত উঠিয়ে দুআ করল,

اللَّهُمَّ إِنِّي آمَنْتُ بِكَ، وَهَاجَرْتُ إِلَى رَسُولِكَ، فَإِذَا أَنْزَلْتَ بِي شِدَّةً شَدِيدَةً دَعَوْتُكَ، فَفَرَّجْتَهَا، فَأَسْأَلُكَ اللَّهُمَّ لَا تَحْمِلْ عَلَيَّ هَذِهِ الْمُصِيبَةَ الْيَوْمَ

হে আল্লাহ! আমি তোমার প্রতি ইমান এনেছি আর তোমার রাসূলের সাথে হিজরত করেছি। আমার উপর বিপদ এসেছে। তুমি আমার বিপদ হটিয়ে দাও। আল্লাহ! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করি যে, আজ তুমি আমাকে বিপদে ফেলো না।

বর্ণনাকারী বলেন, তখনই হঠাৎ তার চেহারার উপর থেকে কাপড় সরে গেল (আর সে নড়েচেড়ে বসল)। এতে আমরা অবাক হয়ে গেলাম। এমনকি আমরা এক সাথে খাবার খেলাম।

এক অসহায় মায়ের দুআয় মৃত সন্তানের জীবন লাভ

২. সালেহ বলেন, উক্ত ঘটনা আমরা হাফস বিন নযর কে শুনালাম। এতে তিনি অনেক আশ্চর্যান্বিত হলেন। অতঃপর ২য় জুমআয় তার সাথে সাক্ষাত হলে বললেন, তোমাদের ঘটনা শুনে আমি অনেক অবাক হয়েছিলাম। রবি বিন কুলসুমের সাথে সাক্ষাত হলে তাকে আমি ঘটনাটি বললাম। তখন সে বলল, আমাকে এক ব্যক্তি বলেছে যে, তার একজন দুর্বল, অন্ধ, বধির  ও বিকলাঙ্গ কন্যা ছিল। তার দেখাশোনার জন্য তার একজন ছেলে ছাড়া আর কেউ ছিল না। একদিন হঠাৎ ছেলেটি মারা গেল। তখন আমি তার নিকট গিয়ে বললাম, আল্লাহ তোমাকে বিপদে পতিত করেছেন। সে বলল, কি হয়েছে? আমার ছেলে তো মরে যায়নি? (এরপর সে দুআর জন্য হাত তুলল)

مَوْلَايَ أَرْحَمُ بِي، لَا يَأْخُذُ مِنِّي ابْنِي، وَأَنَا صَمَّاءُ عَمْيَاءُ مُقْعَدَةٌ، لَيْسَ لِي أَحَدٌ، مَوْلَايَ أَرْحَمُ بِي مِنْ ذَاكَ

হে আল্লাহ! আমার প্রতি দয়া কর। আমার কেউ নেই। (আমি) অন্ধ বধির ও বিকলাঙ্গ। তুমি আমার ছেলেকে আমার থেকে পৃথক করো না। হে আল্লাহ! তার জন্য আমার প্রতি দয়া কর।

বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, এই মেয়ে পাগল হয়ে গেছে। অতঃপর আমি বাজারে গেলাম কাফনের কাপড় কেনার জন্য। ফিরে এসে দেখলাম ছেলে উঠে বসে আছে।

মৃত্যুর পর যায়েদ বিন খারিজার কথা বলা

৩.আবু খালেদ বর্ণনা করেন। আমি ইয়াজিদ বিন নুমান ইবনে বশীর, কাসিম বিন আব্দুর রহমান এর মজলিসে আমার পিতা নুমান ইবনে বশীরের চিঠি নিয়ে আসলাম। (তাতে লিখা ছিল-)

বিসমিল্লহির রহমানির রহীম। নুমান ইবনে বশীরের পত্র উম্মে আব্দুল্লাহ ইবনে আবু হাশিম এর প্রতি। তোমার প্রতি সালাম। আমি আল্লাহ তাআলার প্রশংসা জ্ঞাপন করি যিনি ব্যতীত কোন মাবুদ নাই। তুমি আমাকে পত্র লিখেছিলে যে, আমি যেন তোমাকে যায়দ বিন খারেজার মৃত্যুর অবস্থা প্রসঙ্গে কিছু বলি। তার ঘটনা হলো এই যে, হঠাৎ তার গলায় কষ্ট আরম্ভ হলো যদিও সেদিন মদীনার মধ্যে সে-ই সবেচেয়ে সুস্থ ও  প্রাণবন্ত ছিল। যোহর ও আসরের নামাযের মধ্যবর্তী সময়ে তার মৃত্যু হয়ে যায়। আমরা তাকে চিৎ করে শায়িত করে দুইটি চাদর ও একটি কম্বল দ্বারা ঢেকে দিলাম। আমি মাগরিবের নামাযের পর তাসবীহ পাঠ করছিলাম। (এমন সময় তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লাম) আর স্বপ্নে আমাকে কেউ বলল, যায়দ মৃত্যুর পর কথা বলেছে। তখন আমি দ্রুত তার নিকট আসলাম। উপস্থিত আনসারীদের মধ্যে সে বলছে, কওমের মধ্যে মাঝে অবস্থানকারী ব্যক্তি কঠিন ছিলেন, যে আল্লাহর  ব্যাপারে  কোন নিন্দুকের নিন্দার পরোয়া করতেন না। সে লোকদেরকে এই সুযোগ দিতেন না যে, কওমের সবল লোকেরা দুর্বল লোকদের সম্পদ আত্মসাৎ করবে। আমীরুল মুমিনীন উমর (রা) সত্য বান্দা ছিলেন। আর এটা পূর্ববর্তী কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে।

অতঃপর সে বললো, আমীরুল মুমিনীন উসমান (রা) মানুষের অধিকাংশ ভুল-ত্রুটি মাফ করে দেন। দুই রাত অতিবাহিত হয়ে গেছে আর চার রাত বাকী আছে। অতঃপর লোকদের মধ্যে মতভেদ শুরু হবে এবং তারা একে অপরের মাল সম্পদ (অন্যায়ভাবে) ভোগ করবে। কোন শৃঙ্খলা থাকবে না এবং খুন খারাবী বৈধ হয়ে যাবে। অতঃপর ইমানদারগণ অলসতা থেকে ফিরে আসবে আর বলবে, হে লোক সকল! আল্লাহর কিতাবকে মজবুতভাবে ধারণ কর, আমীরের দিকে মনোনিবেশ কর এবং তার কথা মান্য কর ও তার আনুগত্য কর। যে তার থেকে ফিরে যাবে তার প্রাণের কোন নিরাপত্তা থাকবে না। আল্লাহর নির্দেশ (তাকদীরের লিখন) আসবেই। আল্লাহ সবার বড়। এটা জান্নাত আর এটা দোযখ। নবীগগণ ও সিদ্দীকগণ সত্য বলেছেন। তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। হে আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা! আমি কি আমার পিতা খারেজাহ এবং সা’দ এর ব্যাপারে বলবো, যারা উহুদের দিন শহীদ হয়েছেন। (আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-)

كَلَّا إِنَّهَا لَظَى نَزَّاعَةً لِلشَّوَى تَدْعُو مَنْ أَدْبَرَ وَتَوَلَّى وَجَمَعَ فَأَوْعَى

না, কখনো নয়। এটাতো লেলিহান অগ্নিশিখা। যা মাথা হতে চামড়া খসিয়ে দিবে। জাহান্নাম ঐ ব্যক্তিকে ডাকবে যে (সত্যের প্রতি) পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছিল ও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। সে সম্পদ জমা করে ও সংরক্ষণ করে রেখেছিল।– সূরা মাআরিজ ১৫-১৮

অতঃপর তার আওয়ায নিচু হয়ে গেল। যে আমার পূর্বে তার কথা শুনছিল আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বললো, আমি তাকে এটা বলতে শুনলাম যে, চুপ হয়ে যাও। চুপ হয়ে যাও।

আমরা একে অপরে দিকে দেখছিলাম যেখানে আওয়ায আসছিল কাপড়ের নিচ থেকে। আমরা তার চেহারা থেকে কাপড় সরিয়ে দিলে সে বললো, ইনি রাসূল (সা) (আমার পাশে উপস্থিত)। হে আল্লাহর রাসূল! আপনার প্রতি সালাম, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। অতঃপর বললেন, আল্লাহর রাসূলের খলীফা আবু বকর (রা) আমানতদার ছিলেন। দৈহিক দিক থেকে দুর্বল দেখাত কিন্তু আল্লাহর হুকুম বাস্তবায়নে ছিলেন অনেক শক্তিধর। তিনি যা বলেছেন সত্য বলেছেন।

৪. ইবনে উমায়র বলেন, আমি হাবিব বিন সালিম এর নিকট ঐ পত্র পাঠ করলাম যা নুমান ইবনে বশীর উম্মে খালিদকে লিখেছিলেন।

অতঃপর তুমি যায়দ বিন খারিজার মৃত্যুর পর তার কথা বলার ঘটনার ব্যাপারে জানতে চেয়ে আমার নিকট পত্র লিখেছ। অতঃপর যথারীতি পূর্ববর্তী ঘটনা।

৫. সাঈদ ইবনুল মুসায়িব (রহ) বলেন। এক আনসারীর মৃত্যুর সময় উপস্থিত হলো, যখন সে মারা গেল তখন তাকে কাপড় দিয়ে ঢেকে দেয়া হলো। অতঃপর সে বলতে লাগল, আবু বকর (রা) আমানতদার ছিলেন। দৈহিক দিক থেকে দুর্বল দেখাত কিন্তু আল্লাহর হুকুম বাস্তবায়নে ছিলেন অনেক শক্তিধর। উমর (রা) আমানতদার ছিলেন। উসমান (রা) তার পথেই ছিলেন। এখন ইনসাফ শেষ হয়ে গিয়েছে। সবল দুর্বলকে ভক্ষণ করছে।

৬.আনাস বিন মালিক (রা) বলেন, যখন যায়দ বিন খারিজার মৃত্যু হয় তখন তাকে গোসল দেওয়ার জন্য আনসারদের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। এমনকি ঝগড়া বাঁধার উপক্রম হয়ে যায়। অতঃপর এই সিদ্ধান্তের উপর তারা একমত হয় যে তাকে দুইবার গোসল দেওয়া হবে। আর প্রত্যেক সরদার তার রান (শরীর) ধরবে আর তৃতীয় ব্যক্তি পানি ঢালবে। আমিও তাদের মধ্যে ছিলাম। যখন আমি পানি ঢালতে লাগলাম তখন সে কথা বলা শুরু করে দিল।

সে বললো, দুই রাত অতিক্রম হয়ে গেছে আর চার রাত বাকী আছে। কওমের ধনবান ব্যক্তিরা গরীবেদের মাল আত্মসাৎ করা শুরু করে দিয়েছে। লোকদের মধ্যে মতভেদ শুরু হয়ে গিয়েছে আর কোন নিয়ম-শৃঙ্খলা অবশিষ্ট নেই। আবু বকর সিদ্দীক (রা) খুব নরম মনের মানুষ ছিলেন- মুমিনদের প্রতি ছিলেন দয়ার্দ্র আর কাফিরদের প্রতি ছিলেন কঠোর। আল্লাহর ব্যাপারে কোন নিন্দুকের নিন্দার পরোয়া করতেন না। উমর (রা) খুব নরম মনের মানুষ ছিলেন- মুমনিদের প্রতি ছিলেন দয়ার্দ্র আর কাফিরদের প্রতি ছিলেন কঠোর। আর তোমরা (এখন) উসমান (রা) এর নীতির উপর আছ। শুন ও মান্য কর। অতঃপর তার আওয়ায নিচু হয়ে গেল । তার যবান নড়াচরা করতে লাগল কিন্তু দেহ নিথর হয়ে গেল।

৭.নুমান ইবনে বাশীর (রা) বলেন, যায়দ বিন খারেজাহ আনসারদের সরদারদের মধ্য হতে ছিলেন। তার পিতা ছিলেন খারেজাহ বিন সা’দ। আবু বকর (রা) যখন হিজরত করেন তখন তিনি তার ঘরেই অবস্থান করেন। আর নিজের কন্যার বিবাহ খারেজার ছেলের সাথে দেন যার নাম ছিল সা’দ। যায়দ বিন খারেজার পিতা এবং সাদ বিন খারেজাহ উহুদের দিন শহীদ হয়েছিলেন। যায়দ বিন খারিজাহ নবী (সা) এর যুগ, আবু বকর সিদ্দীক (রা) এর খিলাফত, উমর (রা) এর খিলাফত এবং উসমান (রা) এর খিলাফতের দুই বৎসরকাল পর্যন্ত জীবিত থাকেন। তিনি (মৃত্যুর দিন) যোহর ও আসরের মধ্যবর্তী সময়ে মদীনার এক গলি দিয়ে চলছিলেন। এমন সময় হঠাৎ পড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। যখন আনসাররা জানতে পারনে তখন তাকে উঠিয়ে ঘরে নিয়ে গেলেন। তারা তাকে দুটি চাদর ও একটি কম্বল দ্বারা ঢেকে দিলেন। আর ঘরের মধ্যে আনসার পুরুষ ও মহীলারা কাঁদতে লাগলেন। এই অবস্থায়ই সে ছিল।

 মাগরিব ও এশার মধ্যবর্তী সময়ে তারা এক আওয়ায শুনতে পায় যে, কেউ বলছে, চুপ হয়ে যাও। লোকেরা দেখল যে, এই আওয়ায কাপড়ের নিচ থেকে আসছে। তারা যখন তার চেহারা ও বুক থেকে কাপড় সরালেন তখন যে কথা বলছিল সে তার মুখ দিয় বলছিল [মুহাম্মদ (সা)] শেষ নবী। তারপর আর কোন নবী আসবে না। অতঃপর যে কথা বলছিল তার মুখ দিয়ে বললো, সত্য বলেছে, সত্য বলেছে। অতঃপর যে কথা বলার সে তার মুখ দিয়ে বললো, আবু বকর (রা) রাসূলের খলীফা। সিদ্দীক ও আমীন। যে দৈহিক দিক থেকে দুর্বল ছিল কিন্তু আল্লাহর হুকুমের ব্যাপারে ছিল শক্তিধর। অতঃপর যে কথা বলছিল তার মুখ দিয়ে বললো, সত্য বলেছে, সত্য বলেছে। অতঃপর বললো, মাঝে অবস্থানকারী ব্যক্তি কঠিন ছিলেন, যে আল্লাহর  ব্যাপারে কোন নিন্দুকের নিন্দার পরোয়া করতেন না। যে লোকদেরকে নিষেধ করতেন সবলদেরকে দুর্বলদের মাল আত্মসাৎ করতে। আমীরুল মুমিনীন উমর (রা) আল্লাহর বান্দা ছিলেন। অতঃপর যে কথা বলছিল সে বললো, সত্য বলেছে, সত্য বলেছে। অতঃপর বললো, আমীরুল মুমিনীন উসমান (রা) মুমিনদের প্রতি দয়ার্দ্র এবং তাদের ভুল-ত্রুটি মাফ করে দেন।

দুই রাত অতিবাহিত হয়ে গেছে আর দুই বছর দুই রাত এর সমান হয়ে গছে। আর চার বৎসর বাকী রয়ে গেছ। যার জন্য কোন নিয়ম শৃঙ্খলা বাকী রয়নি। খুন খারাবী বৈধ হয়ে গেছে এবং কিয়ামত নিকটবর্তী হয়ে গেছে। লোকেরা একে অপরের মাল আত্মসাৎ করছে। (এক সময়) লোকেরা নিজেদের অলসতা থেকে বিরত হবে। তারা বলবে, হে লোকসকল! আল্লাহর কিতাব মজবুতভাবে ধারণ কর। নিজের আমীরের দিকে মনোবিশ কর এবং তার কথা শুন ও তার আনুগত্য কর। তারা তোমাদের (পূর্ববর্তীদের) নীতির উপর আছেন। যে তাদের থেকে মুখ ফিরাবে তার প্রাণের কোন নিরাপত্তা থাকবে না। আল্লাহর নির্দেশ আসবেই। এটা দুইবার বললেন। এটা জান্নাত আর এটা দোযখ। এ হলো নবীগন আর এ শহীদগণ। হে আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা! আমি আমার পিতা খারেজাহ এবং ভাই  সা’দ এর ব্যাপারে জেনে নিয়েছি যারা উহুদের দিন শহীদ হয়েছেন। (আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-)

كَلَّا إِنَّهَا لَظَى نَزَّاعَةً لِلشَّوَى تَدْعُو مَنْ أَدْبَرَ وَتَوَلَّى وَجَمَعَ فَأَوْعَى

না, কখনো নয়। এটাতো লেলিহান অগ্নিশিখা। যা মাথা হতে চামড়া খসিয়ে দিবে। জাহান্নাম ঐ ব্যক্তিকে ডাকবে যে (সত্যের প্রতি) পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছিল ও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। সে সম্পদ জমা করে ও সংরক্ষণ করে রেখেছিল।– সূরা মাআরিজ ১৫-১৮

অতঃপর বললেন, ইনি রাসূলুল্লাহ (সা), ইনি রাসূলুল্লাহ (সা)। আপনার প্রতি সালাম, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক।

নুমান ইবনে বাশীর (রা) বলেন, আমাকে বলা হয়েছে যে, যায়দ বিন খারেজাহ মৃত্যুর পর কথা বলেছেন। আমি লোকদেরকে ডিঙিয়ে তার মাথার কাছে গিয়ে বসলাম। আমি তার কথার কিছু অংশ শুনলাম। সে বলছিল মাঝের ব্যক্তি খুব কঠিন। এমনকি কথা শেষ হয়ে গেল। আমি লোকেদরেকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, সে আমার পূর্বে আর কি বলছিল? তখন তারা আমাকে বিস্তারিত বললো।

মুসায়লামার হাতে শহীদ হওয়া এক ব্যক্তি মৃত্যুর পর কথা বলেছে

৮.আব্দুল্লাহ বিন উবায়দুল্লাহ আনসারী বলেন, মুসায়লামাতুল কাজ্জাবের হাতে শাহাদত বরণকারী একজন কথা বলেছেন, সে বলেছে মুহাম্মদ (সা) আল্লাহর রাসূল। আবু বকর সিদ্দীক ও উসমান (রা) খুব নরম মনের মানুষ এবং দয়ালু।

একজন ইবাদতগুযার ব্যক্তির ঘটনা

৯. মুহাম্মদ বিন বাকার (রহ) বলেন, আমরা তিন ভাই ছিলাম। আমাদের মধ্যে ২য় জন ছিল খুব ইবাদগুযার। অনেক বেশী সিয়াম পালনকারী এবং আমাদের মধ্যে সবচেয়ে মর্যাসম্পন্ন ব্যক্তি। আমি কোন সৈন্যবাহীনির সাথে যুদ্ধে ছিলাম। যখন ফিরে আসলাম তখন ঘরের লোকেরা বললো, নিজের ভাইয়ের খবর নাও, সে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত। যখন আমি তার নিকট গেলাম, আমার যাওয়ার পূর্বেই তার প্রাণ বেরিয়ে গেল। আমি তার উপর কাপড় দিয়ে দিলাম এবং তার পাশে বসে কাঁদতে লাগলাম।

মুহাম্মদ ইবেন বাকার (রহ) বলেন, (এমন সময়) আমার ভাই হাত উঁচু করে নিজের চেহারা থেকে কাপড় সরিয়ে বললেন, আসসালামুআলাইকুম। আমি বললাম, হে আমার ভাই! তুমি কি মৃত্যুর পর জীবিত হলে? সে বললো, হ্যাঁ। আমি আমার রবের সাথে সীমাহীন আনন্দ নিয়ে সাক্ষাত করেছি আর আমার প্রতিপালক আমার প্রতি তার অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন নি। আমাকে জান্নাতী পোষাক পড়িয়েছেন। যেই বিষয়ে তোমরা ভয় কর আমি তা সহজ পেয়েছি। এই কথা তিনি তিনবার বললেন। আর তিনবার বললেন, আমল কর, অলসতা করো না।

আমি রাসূলুল্লাহ (সা) এর সাথে সাক্ষাত করেছি। আমি কসম করেছি যে, তার উঠার  পূর্বেই আমি ফিরে আসব। অতএব তুমি আমার কাফন দাফনে দ্রুততা কর। অতঃপর সে পূণরায় মৃত্যুবরণ করল। এত দ্রুত সে ফিরে গেল, যেভাবে একটি কঙ্কর পানিতে নিক্ষেপ করা হয়।

মুহাম্মদ বিন বাকার (রহ) বলেন (অতঃপর আমি লোকদেরকে) বললাম, আমার ভাইরে দাফন কাফনে জলদি কর।

১০.রিব’ঈ বিন হিরাশ (রহ) বলেন, আমার ভাই মৃত্যুবরণ করেন, যে গরমের দিনে অনেক রোযা রাখত আর শীতের রাতে কিয়াম (দীর্ঘ সময় দাড়িয়ে নামায আদায়) করত। অতঃপর পূর্ববর্তী ঘটনা বর্ণনা করেন। এর মধ্যে এতটুকু বেশী আছে যে,

এই ঘটনা হযরত আয়িশাহ (রা) এর নিকট পৌঁছলে তিনি এর সত্যায়ন করে বলেন, আমরা শুনতাম যে, এই উম্মতের এক ব্যক্তি মৃত্যুর পর কথা বলবে।

চলবে

জান্নাতের ঠিকানা দেখার উপর কসম

১১.আলী ইবনে উবায়দুল্লাহ গাত্বফানী এবং হাফস বিন ইয়াযিদ বলেন, আমাদের নিকট এই সংবাদ পৌঁছেছে যে, ইবনে হিরাশ কসম খেয়েছিলেন যে, সে ঐ পর্যন্ত হাসবে না, যে পর্যন্ত না সে জেনে নিবে যে, সে জান্নাতী না জাহান্নামী। অতঃপর সে এমন অবস্থায জীবিত রইলো যে, তাকে কেউ কখনো হাসতে দেখেনি। যখন সে মৃত্যুবরণ করলো তখন হাসতে লাগল। বর্ণনাকারী বলেন, যখন এই কথা হযরত আয়িশাহ (রা) পর্যন্ত পৌঁছল তখন তিনি বললেন, বনী আব্‌স এর ভাই সত্য বলেছে। আল্লাহ তার প্রতি দয়া করুন। আমি রাসূলুল্লাহ (সা)-কে বলতে শুনেছি যে,

يَتَكَلَّمُ رَجُلٌ مِنْ أُمَّتِي بَعْدَ الْمَوْتِ مِنْ خِيَارِ التَّابِعِينَ

 আমার উম্মতের এক ব্যক্তি মত্যুর পর কথা বলবে আর সে হবে তাবিয়ীনদের উত্তম লোকদের মধ্য হতে।

১২, হারিস আল গানাভী বলেন, রবী’ বিন হিরাশ এই কসম খেয়েছিলেন যে, সে কখনো হাসবে না, যে পর্যন্ত না সে তার ঠিকানা জেনে নিবে। এজন্য সে কখনোই হাসেনি। তবে যখন তার মৃত্যু হলো তখন হাসতে লাগল। এরপর তার ভাই রিবয়ী’ও কসম খেল যে, সেও ঐ পর্যন্ত হাসেবে না, যে পর্যন্ত না সে জেনে নিবে যে, সে জান্নাতী নাকি জাহান্নামী। হারেস আল গানাভী বলেন, আমাকে তার গোসল প্রদানকারী ব্যক্তি বলেছে যে, যখন আমরা তার গোসল দিচ্ছিলাম তখন সে মুচকী হাসছিল।

মৃত্যুর পর শহীদ হওয়ার জন্য জীবিত হওয়া

১৩.আবু আসেম তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। আমার মামা মৃত্যুবরণ করেন। আমরা তাকে কাপড় দিয়ে ঢেকে দেই। যখন আমরা তাকে গোসল দেয়ার জন্য দাড়ালাম তখন তিনি তার চেহারা থেকে কাপড় সরিয়ে বললেন, হে আল্লাহ! আমি তোমার পথে ণকরতে চাই। এরপর তিনি জীবিত রইলেন। এমনকি বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করে শহীদ হলেন।

তিন ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না

১৪. মুগিরা বিন হাযাফ রু’বাতা বিনতে বীজান থেকে বর্ণনা করেন। তিনি অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েন। লোকেরা মনে করলো তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। তারা তাকে গোসল দিয়ে কাফন পড়ালেন। কিন্তু সে কথা বলতে শুরু করলো। তিনি তাদের দিকে দেখে বলতে লাগলেন, তোমরা যা ভয় কর আমি তা খুব সহজ পেয়েছি। আর আমি দেখলাম যে, তিন ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না। ১.আত্বীয়তা সম্পর্ক ছিন্নকারী, ২.মদপানে অভ্যস্থ ব্যক্তি এবং ৩.মুশরিক। 

মৃত্যুর সময় আমলনামা দর্শন

১৫.সালেহ বিন হাই (রহ) বলেন, আমাকে আমার প্রতিবেশী বলেছে যে, এক ব্যক্তির রূহ কবযের সময় তার আমলনামা তার সামনে তুলে ধরা হলো। সে বললো, আমি দেখলাম যেই গুনাহর ব্যাপারেই আমি ক্ষমা প্রার্থনা করেছি তা ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। আর যে গুনাহর জন্য আমি ক্ষমা চাইনি তা ঐ অবস্থায়ই রয়ে গেছে। এমনকি আমি কোন ছোট জিনিসও (চলাচলের সুবিধার জন্য) রাস্তা থেকে সরিয়ে দিয়েছি  তার জন্যও আমার আমলনামায় নেকী লিখে দেয়া হয়েছে। আর এক রাতে আমি নামায পড়ছিলাম আর আমার আওয়ায উঁচু হয়ে যায়। আমার আওয়ায শুনে আমার গুলামও নামায পড়তে শুরু করলো। এর জন্য আমার অংশেও তার পরিবরর্তে (তার সমপরিমাণ) নেকী লিখে দেয়া হয়েছে। আর একদিন আমি লোকদের সামনে এক ভিক্ষুককে এক দিরহাম দিয়েছিলাম তাদেরকে দেখানের জন্য। আমি ওটাকে এই অবস্থায় দেখলাম যে, না তো সেটা আমার অধিকারে আসছে আর না আমার বিপরীত এ যাচ্ছে।   

চলবে

আবু বকর ও উমর (রা) এর প্রতি বিদ্বেষ এর কুফল

১৬.আব্দুল মালিক বিন উমায়র বলেন, কূফায় এক ব্যক্তি মৃতদের কাফন পড়াত। এক ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলো। তাকে কাফন দেয়ার জন্য বলা হলে তিনি কাফন নিয়ে সেই ব্যক্তির নিকট গেলেন। তার উপর কাপড় দেয়া ছিল। তিনি যখন তার উপর থেকে কাপড় সরালেন তখন সে বলতে লাগল, তারা আমাকে ধোঁকা দিয়েছে তারা আমাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আগুন আগুন। আমি তাকে বললাম, ’লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পাঠ কর। সে বললো, আমি এটা পাঠ করতে সক্ষম নই। জিজ্ঞাসা করা হলো কেন? সে বললো আবু বকর (রা) ও উমর (রা)-কে গালি দেয়ার কারণে।

১৭.খালফ বিন হাওশাব (রহ) বলেন, মাদায়েন এ এক ব্যক্তি মৃত্যুবরন করেন। যখন তার উপর কাপড় দিয়ে দেয়া হলো তখন কিছু লোক উঠে চলে গেল আর কিছু লোক বসে রইলো। এমন সময় তার কাপড় নড়াচরা করতে লাগল। তখন মৃতব্যক্তি নিজে তার উপর থেকে কাপড় সরিয়ে বললো, এই মসজীদে কিছু লোক অহেতুক কথাবর্তা বলে থাকে অর্থাৎ এই মাদায়েনের মসজীদে। এই লোকেরা আবু বকর ও উমর (রা)-কে লা’নত করে ও তাদেরকে অস্বীকার করে থাকে। তাদের উপর রূহ কবযকারী ফেরেশতারা লা’নত করে এবং তাদেরকে অস্বীকার করে। আমরা বললাম,  হে অমুক! হয়তো তোমাকেও এই কারণে এই মুসীবতে গ্রেফতার করা হয়েছে?  সে তখন বললো, ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ ‘আস্তাগফিরুল্লাহ।’ এরপর সে এমনভাবে অদৃশ্য হয়ে গেল যেভাবে একটি কঙ্কর পানিতে অদৃশ্য হযে যায় অর্থাৎ মৃত্যুবরণ করল।

১৮.আবুল খাসিব বলেন, আমি একজন বব্যবসায়ী ছিলাম। আমি এমন কোন মৃত ব্যক্তির ব্যাপারে শুনিনি, মৃত্যুর পর যাকে কাফন দেয়া হয়নি। এক ব্যক্তি আমার নিকট এসে বলতে লাগল, এখানে এক ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছে আর তাকে কাফন দেয়ার কেউ নেই। তখন আমি আমার সাথীকেও বললাম, আমার সাথে চল। আমরা তার নিকট গেলাম। লোকেরা তার পাশে বসা ছিল। আর তাদের মধ্যে কাপড়ে আবৃত মৃতব্যক্তি শায়িত ছিল। তার পেটের উপর ইট আর মাটি রাখা ছিল। আমি বললাম, তোমরা একে গোসল দাওনা কেন? তারা বললো, এর কাফনের ব্যবস্থা হয়নি। আমি আমার বন্ধুকে বললাম, তুমি কাফন নিয়ে আস। আমি তার পাশে বসে গেলাম। আমি বসে ছিলাম এমন সময় মৃতব্যক্তি নিজে উঠে তার উপর থেকে ইট আর মাটি সরাতে সরাতে বললো, আগুন আগুন। আমি তাকে বললাম, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পাঠ কর। সে বললো এটা আমাকে এখন কোন উপকার দিচ্ছে না। আল্লাহ লা’নত করুন কুফার মাশায়েখদের যারা আমাকে ধোঁকায় ফেলেছে আর আমি এত গুমরাহ হয়ে গেছি যে, আবু বকর ও উমর (রা)-কে গালি দিয়ে ফেলেছি। অতঃপর সে পূণরায় মরে গেল। আমি বলালাম আল্লাহর শপথ! আমি তাকে কাফন দিব না। আর আমি তাকে কাফন দেয়া ব্যতীত উঠে চলে এলাম।  

১৯.আবুল খাসিব বলেন, আমি একজন স্বাচ্ছন্দ্যশীল ব্যবসায়ী ছিলাম এবং মাদায়েন এর কিসরায় বসবাস করতাম। আর সেটা ছিল ইবনে হুবায়রার প্লেগের সময়। আশরাফ নামে আমার একজন কর্মচারী আমার কাছে এসে বললো, মাদায়েন এ এমন একজন মৃত ব্যক্তি আছে যার কাফনের কাপড় নেই। তখন আমি আমার সওয়ারীতে করে তার ঘরে গেলাম। তার পাশে বসে তার শুভাকাঙ্ক্ষী ও বন্ধু-বান্ধবগণ তার ইবাদত-বন্দেগীর কথা ও তার গুণ-গান করছিল। আর মৃত ব্যক্তির পেটের উপর ইট রাখা ছিল। আমি এক ব্যক্তীকে পাঠালাম কাফন ক্রয়ের জন্য এবং কবর খনন করতে বললাম এবং কবরের জন্য ইটের ব্যবস্থা করলাম। যখন আমি তাকে গোসল দেওয়ার জন্য পানি গরম করতে লাগলাম তখন হঠাৎ মৃতব্যক্তি উঠে বসলো এবং তার পেট থেকে ইট খসে পড়লো। আর সে এই বলে উঠল, হায় জাহান্নাম! যখন তার বন্ধুরা এই অবস্থা দেখল তখন সবাই (ভয পেয়ে) চলে গেল।

আবুল খাসিব বলেন, আমি তার নিকটবর্তী হয়ে তার বাঁজু ধরে ঝটকা দিলাম এবং বললাম, তুমি কি দেখেছ এবং তোমার কি অবস্থা? সে বললো আমি কুফার মাশায়েখদের সান্নিধ্যে ছিলাম আর তারা আমাকে তাদের দীন ও মতাদর্শে দাখিল করিয়েছিলেন। আমিও তাদের সাথে মিলে আবু বকর ও উমর (রা)-কে গালি গালায করতাম (ভাল-মন্দ বলতাম) এবং তাদের সাথে বিদ্বেষ রাখতাম। বর্ণনাকারী বলেন, আমি তাকে বললাম, তুমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাও এবং এখন থেকে আর গালি দিও না। সে বললো আমি আমার ঠিকানায় পৌঁছে গেছি আর এটা আমাকে এখন কোন উপকার করছে না। আমি জাহান্নাম দেখতে পেয়েছি এবং আমাকে বলা হয়েছে যা কিছু তুমি দেখেছে তা তোমার বন্ধুদেরকে বলে আস।

আবুল খাসিব বলেন যে, আমি জানি না যে তার কথাবার্তা সম্পেূর্ণ হওয়ার পূর্বেই কি সে তার পূর্বের (মৃত) অবস্থায় চলে গেছে কিনা। আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম। অতঃপর কাফন আনা হলো। আমি কাফন নিযে নিলাম এবং বললাম, না আমি তার কাফন দিব আর না গোসল দিব, আর না জানাযা আদায় করব। অতঃপর আমি ফিরে আসলাম। অতঃপর আমাকে বলা হলো যে, যে লোকেরা তার সাথে ছিল তারা তাকে গোসল দিয়েছে এবং জানাযা দিয়েছে। আর তারা লোকদের বলেছে যে যা কিছু আমি শুনেছি তারাও তা শুনেছে। আর যেভাবে আমি আমাকে বাঁচিয়েছি তারাও তাদেরকে বাঁচিয়েছে। (তারা বললো,) তোমরা কিভাবে আমাদের সাথীকে অপছন্দ কর, এটাতো শয়তানের আওয়ায ছিল। যা তার যবান দ্বারা বলছিল। খালফ বলেন, হে আবুল খাসিব এই ঘটনা কি তোমার সামনে ঘটেছে? সে বললো আমার এই দুচোখ দেখেছে আর এই দুই কান শুনেছে। খালফ বলেন এরপর আমি তার (আবুল খাসীব) ব্যপারে লোকজনকে জিজ্ঞাসা করেছি। তারা তার ব্যাপারে ভাল বলেছে (বিশ্বস্ত ও সত্যবাদী)।

২০. খালফ বিন তামীম (রহ) বলেন, আমি সুফিয়ান সাওরী (রহ)-কে দেখেছি তিনি এই ঘটনার ব্যাপারে এই শায়খ (আবুল খাসীব)-এর নিকট জিজ্ঞাসা করতে।  

চলবে

জাহিলী যুগের এক ব্যক্তির ঘটনা

২১.মুজালিদ বিন আমির বর্ণনা করেন। আমরা জুহায়নার (জুহায়না গোত্রের) মজলিসে পৌঁছলের দেখলাম যে, এক বৃদ্ধ ব্যক্তি বসে আছে। আমিও তার পাশে বসে গেলাম আর সে আমাকে বলতে শুরু করলো যে, জাহিলিয়াতের যুগে এক ব্যক্তি খুব অসুস্থ হয়ে গেল। আমি তাকে কাপড় দিয়ে ঢেকে দিলাম এই মনে করে যে, হয়তো সে মারা গেছে। আমি তার কবর খনন করার নির্দেশ দিলাম আর নিজে তার কাছে বসে রইলাম। এমন সময় সে হঠাৎ কথা বলতে শুরু করলো। সে বললো, আমি তোমার নিকট এসেছি যেমন তুমি দেখতে পাচ্ছ। যখন আমি অজ্ঞান (মৃত) হলাম তখন আামাকে বলা হলো- (কবিতা)

“তুমি কি দেখ না যে তোমার মা কাঁদছে আর তোমার জন্য কবরও খনন করা হচ্ছে। তোমার মা তোমার জন্য কাঁদছে। তুমি কি মনে কর যে, আমরা তোমার প্রতি তার মহব্বত অন্য বাচ্চাদের দিকে ফিরিয়ে দিব, যে তার থেকে জন্ম নিয়েছে? আমরা এই অপবাদ কুসালের প্রতি আরোপ করেছি, যে এই কাজ করেছে। তুমি কি তোমার প্রতিপালকের কৃতজ্ঞতা আদায় করবে, নামায পড়বে এবং শিরক ও গুমরাহীর পথ ছেড়ে দিবে?”

আমি বললাম হ্যাঁ। (আমাকে বলা হলো) তুমি যাও আর দেখ কুসালের কি অবস্থা। যখন সে গেল দেখল যে, সে মরে গেছে এবং তাকে দাফনও করে দেয়া হয়েছে। অতঃপর এই ব্যক্তি জীবিত রইলো এমনকি ইসলামের যুগ পেল।

২২. মুজালিদ শাবী থেকে বর্ণণা করেন যে, তিনি জুহায়নার এক বৃদ্ধ ব্যক্তির কথা বর্ণনা করেন। অতঃপর তিনি এই ঘটনা বর্ণনা করেন। অতঃপর বলেন আমি এই জুহনী লোকটিকে নামায পড়তে এবং মূর্তিকে ভাল-মন্দ বলতে শুনেছি।

২৩.শাবী (রহ) বর্ণনা করেন যে, ইসলামের প্রথম যুগে জুহায়নার এক ব্যক্তি অসুস্থ হলে তার ঘরের লোকেরা ধারণা করলো যে, সে হয়তো মরে গেছে আর তার কবরও খনন করা হয়ে গেছে। অতঃপর শাবী (রহ) পুরো ঘটনা বর্ণনা করেন যার মধ্যে নিম্নের কবিতাগুলো বৃদ্ধি ছিল-

আমি তার ব্যাপারে কুসালের প্রতি অপবাদ আরোপ করেছি। অতঃপর আমি তার উপর পাথর দিয়ে দিয়েছি। সে ভাবছিল যে, সে এমন করে নাই।  

আল্লাহ তাআলা আমানতদার

২৪.যায়দ বিন আসলাম তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। উমর (রা) এর নিকট লোকজন উপস্থিত ছিলা। এক ব্যক্তি সেখান দিয়ে যাচ্ছিল যার কাঁধে তার ছেলে বসে ছিল। উমর (রা) বললেন, আমি একজন অপরিচিতকে তার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ অপর একজন অপরিচিতকে (বাচ্চাকে) দেখতে পাচ্ছি। তখন ঐ ব্যক্তি বললো. হে আমীরুল মুমিনীন! আল্লাহর শপথ! এই ছেলেকে তার মৃত মা জন্ম দিয়েছে। উমর (রা) বললেন, তোমার কল্যাণ হোক, কিভাবে তা সম্ভব?

সে বললো, আমি সফরে ছিলাম আর তার মা ছিল গর্ভবতী। আমি (সফরে যাওয়ার সময়) তাকে বললাম,

أَسْتَوْدِعُ اللَّهَ مَا فِي بَطْنِكِ

যা তোমার পেটে আছে তাকে আল্লাহর উপর সোপর্দ করলাম।

যখন আমি সফর থেকে ফিরে আসলাম তখন আমাকে বলা হলো যে, তোমার স্ত্রী মৃত্যুবরণ করেছে। এক রাতে আমি আমার চাচাত ভাইয়ের সাথে জান্নাতুল বাকীতে (জান্নাতুর বাকঅ কবরস্তানে) বসা ছিলাম। এমন সময় কবরের মধ্যে প্রদীপের আলো দেখতে পাই।  আমি আমার চাচাত ভাইকে জিজ্ঞাসা করলাম এটা কি? সে বললো আমি জানি না, তবে অমুক মহীলার (তোমার স্ত্রীর) কবরের মধ্যে এই আলো হয়। আমি আমার সাথে একটি কোদাল নিয়ে কবরের নিকট গেলাম। দেখলাম যে কবরটি খোলা আর একটি বাচ্চা তার মায়ের কোলে রয়েছে। আমি আওয়ায দিলে একজন আহ্বানকারী বললো যে, হে নিজের প্রতিপালকের নিকট আমানত রাখনেওয়ালা ব্যক্তি! নিজের আমানত বুঝে নাও। যদি তুমি তোমার স্ত্রীকেও সোপর্দ করতে তবে তোমার স্ত্রীকেও আজ জীবিত পেতে। অতঃপর যখন আমি বাচ্চাকে উঠালাম তখন কবর নিজ থেকেই বন্ধ হয়ে গেল।

মায়ের সাথে বে-আদবীর কুফল

২৫.বসরাবাসীদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি বর্ণনা করেন যে, আমি বসরার এক কুয়ার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন গাধার চিৎকারের আওয়ায শুনতে পেলাম। আমি লোকদেরকে জিজ্ঞাসা করলাম এই আওয়ায কিসের? তারা বললো, এটা এমন ব্যক্তি যে, তার মা যখন কোন ব্যাপারে কথা বলত তখন সে বলত, গাঁধার মত চেঁচাচ্ছ কেন? আর তার মা বলত আল।লাহ তোকে গাঁধা বানিয়ে দিক। যখন এই ব্যক্তি মারা গেল তখন থেকে প্রতি রাতে তার কবর থেকে গাঁধার চিৎকারে আওয়াজ ভেসে আসে।

চলবে

২৬.মুজাহিদ (রহ) বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি কোন এক কাজে বের হলাম আর দেখলাম যে, মাটির নীচ থেকে একটি গাধা মাথা বের করে তিনবার চিৎকার করে পূণরায় মাটির অভ্যন্তরে চলে যায়। আমি এ ব্যাপারে লোকদেরকে জিজ্ঞাসা করার জন্য গেলে তারা আমাকে বললো, তুমি কি তাকে চিন? আমি বললাম, না। তারা বললো, সে হলো অমুক গোত্রের যুবক। তার মা চার দেয়ালের মাঝে থাকত। যখনই তার মা তাকে কোন কাজের কথা বলত, তখন সে তার মাকে গালি দিত আর গাধার মত চিৎকার করত। যখন সে মারা গেল তখন আমরা তাকে ঐ কবরে দাফন করে দিলাম। যখন থেকে আমরা তাকে দাফন করেছি তখন থেকে সে তার মাথা বাহিরে বের করে তিনবার এই চার দেয়ালের দিকে মুখ করে গাধার মত চিৎকার করে পূণরয় মাটির অভ্যন্তরে চলে যায়।

২৭.আব্দুল্লাহ ইবনে হুযায়ল বলেন, এক বদ-বখত ব্যক্তি ছিল। যখনই তার মা কথা বলত তখনই সে গাধার মত চিৎকার করত আর মাকে বলত তুমি গাধি। যখন সে মারা গেল তখন প্রতিদিন আসরের নামাযের পর তার সিনা পর্যন্ত গাধার মাথা হত এবং কবর থেকে বের হয়ে তিনবার গাধার মত চিৎকার করে আবার কবরে চলে যেত।

এক ব্যক্তির মৃত গাধা জীবিত হওয়া

২৮.শাবী (রহ) বলেন, ইয়ামানের কিছু লোক জিহাদের জন্য সৈন্যবাহিনীর মধ্যে ছিল। তাদের মধ্যে একজনের গাধা মরে গেল। তার সাথীরা চাইল যে, সে তাদের সাথে (তাদরে বাহনে) আসুক। কিন্তু সে তাদের সাথে যেতে অস্বীকার করলো। অতঃপর সে দাড়াল, ওযু করে নামায পড়ে দুআ করলো-

اللَّهُمَّ إِنِّي جِئْتُ مِنَ الدثينةِ مُجَاهِدًا فِي سَبِيلِكِ وَابْتِغَاءَ مَرْضَاتِكَ، وَإِنِّي أَشْهَدُ أَنَّكَ تُحْيِي الْمَوْتَى وَتَبْعَثُ مَنْ فِي الْقُبُورِ، فَلَا تَجْعَلْ لِأَحَدٍ عَلَيَّ مِنَّةً، وَإِنِّي أَطْلُبُ إِلَيْكَ أَنْ تَبْعَثَ لِي حِمَارِي

হে আল্লাহ! আমি দাসিনা নামক স্থান হতে তোমার পথে জিহাদ করতে এসেছি আমি তোমার সন্তুষ্টির আশায়। নিশ্চয়ই আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমি মৃতকে জীবিত করবে এবং যারা কবরে আছে তাদেরকে দ্বিতীয়বার উত্থিত করবে। হে আল্লাহ! আমাকে তুমি কারো কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করো না। আমি তোমার নিকট দুআ করছি যে, আমার গাধাকে পূণরায় জীবিত করে দাও।

অতঃপর সে গাধার পাশে দাড়িয়ে গাধাকে ঠোকর দিল। গাধা তার কান ঝাড়তে ঝাড়তে উঠে দাড়াল। সে গাধার উপর জীন বাঁধল এবং লাগাম স্বাধীনভাবে ছেড়ে দিয়ে চলতে লাগল। এমনকি নিজের সাথীদের সাথে গিয়ে সাক্ষাত করলো। তারা বললো তুমি কিভাবে পৌছলে? সে বললো আল্লাহ তাআলা আমার গাধাকে জীবিত করে দিয়েছেন।

শাবী (রহ) বলেন আমি ঐ গাধাটিকে কুনাসাহ নামক স্থানে বিক্রি হতে দেখেছি।

২৯. আবু সাবরাহ আন নাখয়ী সূত্রে অনুরুপ ঘটনা।

৩০.মুসলিম বিন আব্দু্ল্লাহ বিন শরীক নাখয়ী (রহ) বলেন, নাখয়ী গোত্রের এক ব্যক্তির নিকট একটি গাধা ছিল। যার নাম ছিল নাবাতাহ বিন ইয়াযিদ। উমর (রা) এর যুগে সে সৈন্যবাহিনীর অনন্তর্ভুক্ত ছিল। যখন সে জিহাদে শানে আমীরাহ নামক স্থানে পৌঁছেন তখন তার গাধাটি মরে যায়। অতঃপর তিনি পূর্ববর্তী অনুরুপ সম্পূর্ণ ঘটনা বর্ণনা করেন। তার মধ্যে এতটুক বৃদ্ধি আছে যে, সে তার গাধাটিকে বিক্রির জন্য নিয়ে যায়। কেউ তখন বললো যে, আল্লাহ রব্বুল ইযযত যে গাধাটিকে তোমার জন্য জীবিত করে দিয়েছেন তা তুমি বিক্র করছ? সে বললো আমি কি করব? (এখন আমার এর কোন প্রয়োজন নেই)। বর্ণণাকারী বলেন অতঃপর সে (তার গোত্রের কোন এক ব্যক্তি)  তিনটি কবীতা পাঠ করে যার মধ্যে আমার একটি মনে আছে-

وَمِنَّا الَّذِي أَحْيَا الْإِلَهُ حِمَارَهُ … وَقَدْ مَاتَ مِنْهُ كُلُّ عُضْوٍ وَمَفْصِلِ

আমাদের মধ্যে এমন ব্যক্তি আাছে যার গাধাকে আল্লাহ তাআলা পূণরায় জীবিত করে দিয়েছেন। যদিও তার প্রতিটি হাড় ও জোড়া মরে গিয়েছিল।

চলবে

শত্রুকে হত্যা করতে একজন মৃত সৈন্য সাহায্য করলো
৩১. আবু আব্দুল্লাহ শামী বর্ণনা করেন। আমাদের সৈন্যবাহিনী রোমে যুদ্ধ করছিল। আমাদের কিছু লোক শত্রুদের ধাওয়া করতে শুরু করলো। তাদের মধ্যে দুজন সৈন্য পৃথক হয়ে গেল। তারা বলেন, আমরা একজন বৃদ্ধ রুমীকে দেখলাম, যে তার গাধাকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। যখন সে আমাদের দিকে দেখলো তখন খাঁপ থেকে তলোয়ার বের করলো, নাড়ালো অতঃপর নিজের গাধার উপর চালালো। এমনকি তলোয়ার যমীন পর্যন্ত পৌঁছে গেল। অতঃপর আমাদের দিকে ফিরে বলতে লাগল যে, তোমরা দেখলে তো যে আমি কি করেছি? আমরা বললাম হ্যাঁ।
অতঃপর ময়দানে বের হয়ে আমরা তার উপর হামলা করলাম এবং কিছু সময় পর্যন্ত আমরা লড়াই করতে থাকলাম। এক পর্যায়ে সে আমার সাথীকে মেরে ফেললো অতঃপর বললো, নিজের সাথীর পরণিতী দেখতে পাচ্ছ? আমি বললো হ্যাঁ। আমি তখন নিজের অন্যনা সাথীদেরকে আনার জন্য যেতে চাইলাম। আমি যখন যেতে উদ্যত হলাম তখন আমি মনে মনে নিজেকে বললাম, তোমার জন্য আফসোস! আমার সাথী আমার পূর্বে জান্নাতে চলে গেল আর আমি অন্য সাথীদের তালাশ করছি। আমি ফিরে এসে নিজের ঢাল তলোয়ার নিয়ে তার দিকে যাচ্ছিলাম। আমি তার উপর হামলা করলাম কিন্তু ব্যর্থ হলাম। অতঃপর সে আমার উপর হামলা করলো আর সেও ব্যর্থ হলো। আমি আমার সামান নামিয়ে রাখলাম এবং তার উপর (আবার) হামলা করলাম (আর তখন) সে আমাকে যমীনের উপর মেরে আমার সীনার উপর বসে গেল। অতঃপর সে আমাকে হত্যার জন্য কিছু বের করতে লাগলো।
তখন আমার সেই সাথী যে মরে গিয়েছিল সে উঠে আসলো এবং তার পিছনের চুল ধরে আমার বুক থেকে নামিয়ে দিল এবং আমরা উভয়ে মিলে তাকে হত্যা করলাম। অতঃপর আমরা আমাদের পথে এগুলাম আর সে আমার সাথে চলছিল। যখন আমরা গাছের নিচে পৌঁছলাম তখন সে দ্বীতিয়বার শুয়ে পড়লা এবং মৃত্যুবরণ করলো যেভাবে প্রথমে ছিল। আমি এসে আমার সব সাথীদেরকে তা বললাম তারা এসে দেখল যে, সে শহীদ হয়ে পড়ে আছে।
কবরের আযাবের চাক্ষুষ ঘটনা
৩২. সালিম বিন আব্দুল্লাহ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি সফরে ছিলাম। এক সময় জাহিলিয়াতের যুগের একটি কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম হয়। হঠাৎ সেখান থেকে এক ব্যক্তি বের হয় যার মাথায় আগুনের টুপি পড়া ছিল। গলায় ছিল আগুনের বেড়ী। আর আমার নিকট পানির মশক দেখে বলতে লাগলো হে আব্দুল্লাহ! আমাকে পানি পান করাও। আব্দুল্লাহ (রা) বললেন, আমি বললাম সে কি আমার নাম জানে নাকি আরবের রীতি অনুযায়ী বলছে আব্দু্ল্লাহ (হে আল্লাহর বান্দা)। অতঃপর ঐ কবর থেকে আরেকজন বের হয়ে বললো হে আব্দুল্লাহ! তাকে পানি পান করাবে না। কেননা সে কাফির। অতঃপর তার বেড়ী টান দিয়ে তাকে ধরে কবরে নিয়ে গেল।
অতঃপর আমি রাতে এক বৃদ্ধার ঘরে অবস্থান করি। ঘরের পাশে এক কবর থেকে এই আওয়ায বেরিয়ে আসলো-
بَوْلٌ وَمَا بَوْلٌ، شَنٌّ وَمَا شَنٌّ
পেশাব আর তা কত মারাত্মক, পানির মশক, আর তা কত মারাত্মক।
আমি বৃদ্ধাকে জিজ্ঞাসা করলাম এটা কিসের আওয়ায়? সে বললো, সে হলো আমার স্বামী। যখনই সে পেশাব করত তখন তার ফোঁটা থেকে বেঁচে চলত না। আমি তাকে বলতাম যে, উটও পেশাব করার সময় তার পা দুটিকে প্রশস্ত করে দেয়। কিন্তু সে আমার কথা মানতে অস্বীকার করে । অতঃপর যেদিন সে মরা গেল, সেদিন থেকে তার কবর থেকে এই আওয়ায বেরিয়ে আসে।
অতঃপর অমি জিজ্ঞাসা করলাম কি? মশক কি? সে বললো যে, তার নিকট একবার এক পিপাসার্ত ব্যক্তি এসেছিল। তার নিকট পানি চাইলো। কিন্তু সে তার থেকে মশককে সরিয়ে নিল। যখন মশক শূন্য হয়ে গেল তখন ঐ ব্যক্তি মারা গেল। আর যেদিন মারা গেল সেদিন থেকে এই আওয়ায বেরিয়ে আসে- মসশক আর তা কত মারত্মক।
ইবনে উমর (রা) বলেন, আমি এই ঘটনা রাসূলুল্লাহ (সা) এর নিকট বর্ণনা করলে তিনি আমাকে এ্কাকী সফর করতে নিষেধ করে দেন।

৩৩. সালিম ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি হজ বা উমরার জন্য বের হলাম। যখন রুয়াইছাহ নামক স্থানে পৌঁছলাম তখন আমার পাথেয় শেষ হয়ে গিয়েছিল। আমি পানির নিকট আসলাম। আমার সওয়ারীকে পানি পান করালাম এবং আমার পাত্র ভরে নিলাম। কুয়ার অধীবাসীগণ আমার আওয়ায শুনে আমার কাছে প্রশ্ন করার জন্য এলো। তাদের মধ্যে এক ব্যক্তি বললো, তাকে ছেড়ে দাও তার পাথেয় শেষ হয়ে গেছে। তখন তারা আমাকে ছেড়ে দিল। অতঃপর আমি এক কবরস্তানের পাশ দিয়ে গেলাম যা কিবলামুখী করে বানানো ‍ছিল। এমন সময় একটি কবর থেকে এক ব্যক্তি বেরিয়ে এলো এবং তার গলায় আগুনের শিকল লাগানো ছিল আর অপর এক ব্যক্তি তা ধরে রেখেছিল। আমার সাওয়ারী এই দৃশ্য দেখ পালাতে লাগলো। ঐ ব্যক্তি বললো, হে আব্দুল্লাহ! আমার উপর পানি ঢেলে দাও আর পিছনের লোকটি বললো, হে আব্দুল্লাহ! তার উপর পানি ঢেলো না। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা) বলেন, আমি জানি না ঐ লোকটি কি আমাকে চিনে নাকি সাধারণভাবে আব্দুল্লাহ (আল্লাহর বান্দা) বলে ডাকল। যখন আমি তার দিকে মনোযোগী হলাম তখন দেখলাম অপর ব্যক্তি তাকে ধরে ফেললো এবং মারতে লাগল।

কাজী বা বিচারকের পক্ষপাতীত্বের শাস্তি
৩৪. আতা খোরাসানী (রহ) বলেন, বনী ইসরাইলের এক ব্যক্তি চল্লিশ বছর কাজীর পদে জীবন অতিবাহিত করেন। যখন তার মৃত্যুর সময় হলো তখন সে বললো, আমার মনে হয় এই রোগে আমি মৃত্যুবরণ করব। যদি আমি মারা যাই তবে তোমরা আমাকে মৃত্যুর পর চার পাঁচদিন রেখে দিবে। তারপর যদি কোন অস্বাভাবিক কিছু দেখতে পাও তাহলে আমাকে আওয়ায দিবে। অতঃপর সে মারা গেলে তাকে একটি তাঁবুতে রেখে দেওয়া হলো।
যখন তৃতীয় দিন এলো তখন লাশ থেকে দুর্গন্ধ বের হলো। লোকদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি তাকে আহ্বান করলো। হে অমুক! এই দুর্গন্ধ কসের? আল্লাহর ইচ্ছায় সে কথা বললো। সে বললো, আমি তোমাদের কাযী ছিলাম চল্লিশ বছর। দুই ব্যক্তির ফয়সালা ব্যতীত আমি কারো বিচারে দ্বিধান্বিন্ত হইনি। তাদের মধ্য হতে এক ব্যক্তির প্রতি আমার মনটা পক্ষপাতী ছিল আর তার কথা মন দিয়ে শুনেছি এবং অপরজনের কথার প্রতি তেমন গুরুত্ব দেইনি। এটা সেটারই (সেই গুনাহরই) দুর্গন্ধ। আল্লাহ তাআলা তার কানের উপর মারলেন (মৃত্যুর নির্দেশ দিলেন) তো সে মরে গেল।

ফেরেশতারা হাজীদের উপর দিয়ে তাওয়াফ করে
৩৫. বালআমের একজন শায়খ বর্ণনা করেণ। হিজরী ৬৬ সনের কথা। আমাদের সামনে এমন একজন রোগী এলো যে, আমরা ভাবলাম সে মরে গেছে। আমাদের কতক বললো যে, সে মরে গেছে আর কতক বললো যে, তার রূহ বের হচ্ছে। অতঃপর তখন সে তার হাত উন্মুক্ত করে বললো, আমার পিতা কোথায়? সবাই আমাকে একা ফেলে চলে গেল। অতঃপর সে তার চোখ খুললো। আমরা তাকে বললাম, আমরা তো ভেবেছি যে, তুমি মারা গেছ। তখন সে বললো, আমি ফেরেশতাদেরকে দেখলাম যে, মানুষের মাথার উপর দিয়ে বায়তু্ল্লাহর তাওয়াফ করছে। তাদের মধ্যে এক ফেরেশতা বললো, হে আল্লাহ! তোমার যে বান্দারা দূর দূরান্ত থেকে ক্ষুধা ও কষ্ট সহ্য করে এখানে এসেছে তুমি তাদেরকে ক্ষমা করে দাও। অপর একজন ফেরশেতা বললো, তাদেরকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। আরেকজন ফেরেশতা বললো, হে মক্কাবাসীগন! যদি তোমাদের মাঝে লোকজন (তাওয়াফ করতে) না আসত তাবে দুই পাহাড়ের মাঝে আগুন জালিয়ে দেয়া হত।
অতঃপর সে ব্যক্তি বললো, আমাকে বসাও। লোকেরা তাকে বসিয়ে দিল। সে বললো, হে আমার সন্তান! তাদের জন্য ফল নিয়ে আস। আমি বললাম, আমার প্রয়োজন নাই। লোকেরা একে অপরে বলাবলি করতে লাগল যে, যেভাবে সে বলেছে যে, সে ফেরেশতাদেরকে দেখেছে, যদি সে ফেরেশতাদেরকে দেখে থাকে তবে সে জীবিত থাকবে না। অতঃপর ঐ সময় তার নখ সবুজ হয়ে গেল। বর্ণনাকারী বলেন যে, আমরা তাকে শুইয়ে দিলাম আর সে দ্বীতিয়বার মরে গেল।

দাউদ বিন আবী হিন্দের ঘটনা
৩৬.দাউদ বিন আবী হিন্দ বলেন, একবার আমি এমন কঠিন অসুখে পড়লাম যে, মৃতুকে নিজের সামনে দেখতে লাগলাম। আমার ঘর ও কামরার দরজা সামনাসামনি ছিল। আমি আমার সামনে এমন এক ব্যক্তিকে দেখলাম যার মাথা ও কাঁধ অনেক বড় ছিল। সে ঐ লোকদের মত ছিল যাদেরকে গ্রাম্য বিকট লোক বলা হত। আমি ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন পাঠ করলাম। আর বললাম, আমি কি কাফির যে, সে আমার রূহ কবয করবে। কেননা আমি শুনেছি কাফিরের রূহ এক কদাকার ফেরেশতা (আযরাঈল [আ] কদাকার সুরতে) কবয করবে। এমন সময় আমি আমার ঘরের ছাদ ফেটে যাওয়ার আওয়ায শুনতে পেলাম এবং দেখলাম যে, ছাদ খুলে গেল আর আমি আকাশ দেখতে পেলাম। একটু পর ওখান দিয়ে এক ব্যক্তি এলো যে খুব শুভ্র পোষাক পরিহিত ছিল অতঃপর তার পিছনে অনুরুপ আরেকজন আসলো। ঐ দুই ব্যক্তি তখন কাল ব্যক্তির মুখোমুখ হলো ফলে সে পিছে সরে গেল। সে আমার দিকে ঘুরঘুর করে তাকাচ্ছিল। কিন্তু শুভ্র লোক দুটো তাকে ধমকাচ্ছিল। (ফলে সে চলে গেল)।
দাউদ বলেন, আমার অন্তর পাথরের মত দৃঢ় ছিল। ঐ দুই ব্যক্তির একজন আমার পাশে বসে গেল। আরেকজন আমার পায়ের কাছে বসে গেল। পাশে বসা ব্যক্তি ঐ ব্যক্তিকে বললো, স্পর্শ কর। সে আমার পায়ের আঙ্গুল ছুঁয়ে বললো, অনেক বেশী তাওযাফ করা হয়েছে। অতঃপর পায়ের কাছে বসা ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে বললো, তুমি স্পর্শ কর। তিনি আমার কন্ঠনালী স্পর্শ করে বললো, আল্লাহর যিকির দ্বারা সিক্ত আছে। অতঃপর তাদের একজন তার সাথীকে বললো, এখনো সময় হয়নি। অতঃপর ছাদ খুলে গেল আর তারা চলে গেল। ছাদ পূণরায় যেমন ছিল তেমন হয়ে গেল।

মৃত্যর সময় হুর দর্শন
৩৭. আবু ইদরিস মাদিনী বলেন, আমাদের নিকট মদীনার এক ব্যক্তি এলো যাকে যিয়াদ বলা হত। যখন আমরা রোমে যুদ্ধ করছিলাম তখন শহর অবরোধ করে ফেললাম। আমরা তিন সাথী (একসাথে) ছিলাম- আমি যিয়াদ ও মদীনার এ ব্যক্তি। অবরোধের সময় আমদের এক সাথীকে খাবার আনতে পাঠাতে চাইলাম। এমন সময় হঠাৎ শত্রুপক্ষ থেকে একটি গোলা এসে যিয়াদের নিকটে এসে পতিত হলো যার ফলে তার হাঁটুর হাড় যখম হয়ে গেল আর সে বেহুশ হয়ে গেল। আমি তাকে টেনে সেখান থেকে সরালাম আর আমাদের যে সাথী যাচ্ছিল তাকে আওয়ায দিয়ে ডাকলাম। অতঃপর আমরা উভয়ে মিলে তাকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে গেলাম যেখানে গোলা বা ধনুক পৌঁছতে না পারে।
আমরা দিনের অধিকাংশ সময় তার পাশে অবস্থান করলাম কিন্তু সে কোন নড়াচরা করলো না। অতঃপর সে এমনভাবে হাসলো যে, দাঁত দেখা গেল। অতঃপর নীরব হয়ে গেল। এরপর সে এমনভাকে কাঁদলো যে, অশ্রু বয়ে গেল। অতঃপর নীরব হয়ে গেল। অতঃপর সে আবার হাসলো এরপর আবার কাঁদলো। এর কিছুক্ষষণ পর সে জ্ঞান ফিরে পেল এবং উঠে বসলো এবং জিজ্ঞাসা করলো কি হয়েছে? আমরা বললাম তোমার সাথে যা হয়েছে তা তোমার মনে আছে? সে বললো না। আমরা বললাম তোমার ঐ গোলার কথা মনে আছে যা তোমার সামনে পড়েছিল। সে বললো, হ্যাঁ। আমরা বললাম এতে তুমি যখমী হয়েছিলে। আমরা (তোমাকে সরিয়ে এনে) কাপড় দিয়ে দিয়েছিলাম। অতঃপর আমরা তোমাকে এমন এমন করতে দেখছি।
সে বললো, আমি তোমাদেরকে বলছি আমাকে এক ইয়াকুত ও পান্নার কামরায় নিয়ে যাওয়া হলো। যার বিছানা ছিল রুপার। আমার সামনে বালিশ দেয়া ছিল। যখন আমি বিছানায় বসলাম তখন ডান দিক থেকে অলঙ্কারের আওয়ায শুনতে পেলাম। সেখান থেকে এক রুপবতী নারী বেরিয়ে আসলো। আমি জানি না যে, সে বেশী সুন্দর ছিল নাকি তার পোষাক ও অলঙ্কার। যখন সে আমার সামনে আসলো আমি তা খোশ আমদদীদ বললাম। সেও বললো, মারহাবা! স্বাগতম! ঐ ব্যক্তির জন্য যে আল্লাহর কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা করেনি (বরং তার নেক আমলের বিনমিয়ে লাভ করেছে)। আমরা তোমার স্ত্রীর মত নই। সে তা বলে হাসতে লাগলো এবং আমার ডান পাশে এসে বসে গেল। আমি জিজ্ঞাসা করলাঅম তুমি কে? সে বললো, আমি কোমলমতী তোমার জান্নাতী স্ত্রী। যখন আমি তার দিকে হাত বাড়ালাম তখন সে বললো, ধের্য ধারণ কর। তুমি যোহরের সময় আমাদের এখানে আসবে।
যখন সে কথা বলে নীরব হয়ে গেল তখন আমি আমার বাম পাশ থেকেও অনুরুপ আওয়ায শুনতে পেলাম। দেখলাম তার মত একজন নারী। আর সেও তেমন বললো প্রথমজন যেমন বলেছিল। যখন সে কথা বললো তখন আমি হাসতে লাগলাম। সে আমার বাম পাশে বসে গেল। আমি তার দিকে হাত বাড়ালাম তখন সে বললো, ধৈর্য ধারণ কর। তুমি যোহরের সময় আমাদের এখানে আসবে। এতে আমি কাঁদতে লাগলাম।
বর্ণনাকারী বলেন সে আমাদের সাথে বসে কথা বলতে লাগল। যখন মুআযযিন (যোহরের) আযান দিল তখন সে ঢলে পড়লো এবং মৃত্যুবরণ করলো।
আব্দুল কারীম বলেন, এক ব্যক্তি আমাকে এই ঘটনা আবু ইদরীসের মাধ্যমে বর্ণণা করেন। এক ব্যক্তি আমাকে বললো. আপনি কি নিজে এই ঘটনা তার থেকে শুনেছেন? অতঃপর আমি আবু ইদরীসের নিকট গমন করে পূর্ণ ঘটনা তার থেকে শ্রবণ করি।

এক শহীদের ছিন্নিত মস্তক কুরআন পাঠ করলো
৩৮. আব্দুর রহমান বিন যায়দ বিন আসলাম বলেন, মুসলমানদের একটি দল পথ ভুলে রুমীদের ভূমিতে গিয়ে পৌঁছে। তারা তাদেরকে কয়েদ করে তাদের বাদশার কাছে নিয়ে যায়। সে বললো তোমরা আমাদের ধর্ম গ্রহণ কর। তারা বললো, আমরা কখনো শিরক করবো না। বাদশাহ তার লোকদেরকে বললো, তবে দেখ আমি তাদের কি পরিণতী করি। বাদশাহ একটি হৃদের ধারে বসলেন এবং তাদের একজনকে ডেকে তার গর্দান কেটে পানিতে ফেলে দিলেন। হঠাৎ ঐ নিহত মুসলিমের মাথা হৃদ থেকে উপরে উঠে গেল এবং এই আয়াত তিলাওয়াত করতে লাগল-
يَاأَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ . ارْجِعِي إِلَى رَبِّكِ رَاضِيَةً مَرْضِيَّةً . فَادْخُلِي فِي عِبَادِي وَادْخُلِي جَنَّتِي .
হে প্রশান্ত আত্মা! তুমি তোমার প্রতিপালকের দিকে ফিরে চলো সন্তুষ্ট ও সন্তোষভাজন হয়ে। অতঃপর আমার বান্দাদের মধ্যে শামিল হও এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ কর। – সূরা আল ফাজর ২৭-৩০
এটা দেখে সব কাফিররা চৈতন্য হারিয়ে ফেললো এবং উঠে দাড়িয়ে গেল (ও পালিয়ে গেল)।

শহীদের পাশে হুর গিলমানদের আনন্দ প্রকাশ
৩৯.আব্দুস সামাদ বিন হারিস বলেন, আমরা এক যুদ্ধে শরীক ছিলাম। আমাদের এক সাথী আমাদের থেকে পৃথক হয়ে গের। আমরা তাকে খোঁজ করছিলাম তো দেখলাম যে এক ঘন বৃক্ষের নীচে সে শহীদ হয়ে পড়ে আছে। আর তার আশ-পাশে কিছু কিশোরী মেয়ে বাদ্য বাজাচ্ছিল। আমরা যখন দেখলাম তখন তারা অদৃশ্য হয়ে গেল আর পরে আর তাদেরকে দেখলাম না।

কবর থেকে সালামারে জওয়াব
৪০. আতাফ বিন খালিদ বলেন। আমার খালা বলেন, আমি শহীদদের কবরের পাশে যাই। আতাফ বলেন, তিনি প্রায় সময়ই শহীদদের কবরের পাশে যেতেন। আমি হামজা (রা) এর কবরের পাশে গিয়ে সওয়ারী থেকে নামলাম। এরপর আল্লাহর দেওয়া সামর্থ্যনুযায়ী কিছু সময় নামায পড়লাম। সেখানে না ছিল কোন আহ্বানকারী আর না ছিল কোন জবাব প্রদানকারী এক নওজোয়ান ব্যতীত। সে আমার সওয়ারীর মাথা ধরে দাড়িয়ে ছিল। যখন আমি নামায থেকে ফারেগ হলাম তখন হাতের ইশারায় সালাম করলাম। কিন্তু সালামের জবাব আমি যমীনের নিচ থেকে শুনলাম। আর আমি এটাকে এমনভাবে চিনলাম (এবং বুঝলাম যে তা হামজার উত্তর) যেভাবে আমি জানি যে, আল্লাহ আমাকে সৃষ্টি করেছেন অথবা যেভাবে আমি রাত আর দিনকে চিনি। সালামের উত্তর শুনে আমার শরীরের লোম দাড়িয়ে গেল।

চলবে

কবরের সাওয়াল জবাব শ্রবণ করা

৪১. ইয়যীদ বিন তারীফ বর্ণণা করেন। আমার ভাই এর মৃত্যু হলে তার দাফনের পর সবাই চলে গেল। আমি তার কবরের উপর নিজের মাথা রাখলাম তো হালকা একটি আওয়ায শুনতে পেলাম। আমি বুঝতে পারলাম যে, এটা আমার ভাইয়ের আওয়ায। সে বলছিল – আল্লাহ! অতঃপর তাকে আরেকজন জিজ্ঞাসা করলো, তোমার দীন কি? সে বললো ইসলাম।

৪২. আলা ইবনে আব্দুল কারীম বর্ণনা করেন। এক ব্যক্তি মারা গেল। তার এক ভাই ছির যার দৃষ্টিশক্তি কম ছিল। তার ভাই বলেন যে, যখন তাকে দাফন করে লোকজন চলে গেল তখন আমি তার কবরের উপর মাথা রাখলাম এবং তার ভিতরের আওয়ায শুনতে পলোম। কেউ বলছিল তোমার রব কে? তোমার নবী কে? আমার ভাইয়ের আওয়ায শুনলাম তো সে বলছিল, আল্লাহ (এবং মুহাম্মদ সা)। অপর একজন জিজ্ঞাসা করলো তোমার দীন কি? তখন ভাই বললো ইসলাম।

ইয়াহয়া (আ) এর মৃত্যুর ঘটনা
৪৩. হযরত সাঈদ ইবনে জুবায়র হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন। হযরত ইসা (আ) তার বারজন হাওয়ারীকে ইয়াহইয়া (আ) এর সাথে প্রেরণ করেন যে, তারা লোকদেরকে তালীম দান করবেন। তারা লোকদেরকে (অন্যান্য তালীমসহ) নিজেদের ভাগ্নীর সাথে বিবাহ করতে নিষেধ করলেন। (সেই সময়ের) বাদশাহর ভাগ্নী বাদশাহকে পছন্দ করত। আর বাদশাহও তাকে বিবাহ করার ইচ্ছা পোষণ করত। সে প্রতিদিন তার কোন না কোন ইচ্ছা পূরণ করত। যখন এই সংবাদ তার মায়ের নিকট পৌঁছল যে, তারা নিজেরে ভাগ্নীকে বিবাবহ করতে নিষেধ করছেন, তখন তিনি তার মেয়েকে বললেন, যখন তুমি বাদশাহর কাছে যাবে এবং তিনি তোমাকে তোমার কোন ইচ্ছা পূরণের কথা জিজ্ঞাসা করবেন,ম তখন তুমি বলবে যে, আমি চাই যে, ইয়াহইয়া বিন যাকারিয়া (আ)-কে যবেহ করে দেওয়া হোক। যখন সে বাদশাহর কাছে গেল এবং বাদশাহ তাকে জিজ্ঞাসা করল তোমার কি ইচ্ছা? সে বললো, আমি চাই যে, ইয়াহইয়া বিন যাকারিয়াকে যবেহ করে দেয়া হোক। বাদশাহ বলল, এটা ব্যতীত অন্য কিছু বল। মেয়েটি বলল যে, আমি তো শুধু এটিই চাই। যখন সে জিদ ধরল তখন বাদশাহ অনেক বড় একটি তামার বর্তন আনালেন এবং ইয়াহইযা বিন যাকারিয়া (অ)-কেও ডাকলেন আর তাকে যবেহ করে দিলেন। তার রক্তের একটি ফোটা যমীনে পড়ে টগবগ করতে লাগল যে পর্যন্ত না আল্লাহ তাঅলা তাদের মধ্যে বুখত নসরকে প্রেরণ করেন। তিনি তার অন্তরে এই ইচ্ছা জাগিয়ে দেন যে, এই রক্তের বিনিময়ে তিনি তাদের মধ্যে হত্যা জারী রাখবেন যে পর্যন্ত না তা শান্ত হয়। তিনি তাদের মধ্যে সত্তর হাজার লোকে কতল করেন (তারপর সেই রক্তের ধারা বন্ধ হয়)।

৪৪. শাহর বিন হাওশাব বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, যখন বাদশা ইয়াহয়া (আ)-কে হত্যা করেন তখন তিনি তার মাথা মোবারক তার ভাগ্নির নিকট অর্পণ করেন। অতঃপর মেয়েটি সোনার পাত্রে করে মাথাটি তার মাকে উপহার দেন। ঐ সময় পাত্রের মধ্য থেকে তার মাথাটি বলে উঠল, না এই ময়ে বাদশার জন্য হালাল, আর না বাদশাহ তার জন্য হালাল। যখন তার মা তার মাথাটি দেখল তখন বলল যে, আজ আমার চোখ ঠান্ডা হলো এবং আমি বাদশাহর উপর ইমান আনলাম। অতঃপর সে রেশমী পোষাক পরিধান করে মহলের ছাদের উপর উঠল। মহিলাটি কিছু কুকর পালন করত যাদের সামনে মানুষের মাংস পেশ করা হত। মহিলাটি মহলের দিকে চলতে লাগল। এমন সময় আল্লাহ তাআলা প্রবল বায়ূ প্রেরণ করলেন ফলে সে মহিলাটির কাপড় জড়িয়ে সে ছাদ থেকে কুকুরের সামনে গিয়ে পতিত হলো। কুকরগুলো তাকে আঁচড় দেওয়া শুরু করল আর সে নিরুপায় হয়ে তাকিয়ে রইলো। কুকুরগুলো তার চোখ উপড়ে ফেললো ও (তাকে হত্যা করে ফেললো)।

সূরা সাজদাহ ও মুলকের বরকত
৪৫. হাসান বিন দীনার বর্ণনা করেন। সাবিত আল বুনানী এবং অপর এক ব্যক্তি আব্দুল্লাহ বিন শিখখীর (রহ)-কে তার অসুস্থাবস্থায় দেখতে গেলেন। তারা তাকে অজ্ঞান অবস্থায় পেলেন। বর্ণনাকারী বলেন, তার উপর নূরের তিটি আলো প্রষ্ফুটিত হলো। একটি মাথার দিকে, একটি নাভীর দিকে, আরকেটি পায়ের দিকে। এটা আমাদের জন্য নতুন একটি বিষয় ছিল। যখন সে জ্ঞান ফিরে পেল তখন আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, হে আব্দুল্লাহ! কেমন আছ? আমরা একটি নতুন বিষয় দেখেছি। সে জিজ্ঞাসা করল, কি দেখেছ? আমরা তাকে সব বললাম। সে বলল, তোমরা এসব দেখেছ? আমরা বললাম হ্যাঁ। সে বলল এটা সূরা সাজদাহ বরকত ও নূর ছিল যার মধ্যে ২৯ টি আয়াত আছে। এই সূরার প্রথম আয়াতের নূর আমার মাথা থেকে বের হয়। মাঝোর আয়াতের নূর আমার নাভী থেকে বের হয়। আর শেষ আয়াতসমুহের নূর আমার পায়ের দিক থেকে বের হয। এটা উপরে গিয়ে আমার শাফাআত করবে। (আর) এই সূরা তাবারকা (সূরা মুলক) আমার হিফাযত করবে। এরপর তার মৃত্যু হয়ে যায়। আল্লাহ তার প্রতি রহম করুন।

চলবে

সূরা সাজদাহ ও সূরা মুলকের বরকত
৪৬. মুআররাক আজালী (রহ) বলেন, আমরা এমন এক রোগীর সেবা করলাম, যে অজ্ঞান পড়ে ছিল। (হঠাৎ) তার মাথা থেকে একটি নূর বের হয়ে ছাদ ভেদ করে আকাশের দিকে চলে গেল। অতঃপর আরেকটি নূর তার নাভী থেকে বের হল এবং আকাশের দিকে চলে গেল। অতঃপর আরেকটি নূর তার পায়ের দিক থেকে বের হল এবং আকাশের দিকে চলে গেল। যখন তার জ্ঞান ফিরল তখন আমরা জিজ্ঞাসা করলাম যে, তুমি কি জান যে, তোমার থেকে কি বের হয়েছে? সে বলল, শুন! যে আলো আমার মাথা থেকে বের হয়েছে তা ছিল সূরা সাজদার প্রথম ১৪ আয়াত। যা নাভী থেকে বের হয়েছে তা ছিল (ঐ সূরার) সাজদার আয়াত। আর যেই আলো আমার পা থেকে বের হয়েছে তা ছিল সূরা সাজদার শেষের আয়াতসমূহ। এটা উপরে গিয়ে আমার জন্য শাফাআত করবে। আর সূরা তাবারাকা (মুলক) আমার পাশে আছে যা আমার হিফাযত করবে। আমি প্রতি রাতে এই সূরা দুটির তিলাওয়াত করে থাকি।

কাবিল এর সাথে সাক্ষাত
৪৭. আবু আইয়ুব ইয়ামানী নিজের কওমের লোক থেকে বর্ণনা করেন, যাকে আব্দুল্লাহ বলা হত। সে আর তার কওমের কিছু লোক সমুদ্রে ভ্রমণ করছিল। সমুদ্রে কয়েকদিন অন্ধকার বিরাজমান ছিল। অতঃপর একদিন অন্ধকার দূরিভূত হয় এবং তারা একটি বসতীর নিকেট পৌঁছে। আব্দুল্লাহ বলেন, আমি পানি আনার জন্য বাহিরে বের হলাম তো দেখলাম যে, ওখানে কিছু বন্ধ দরজা ছিল যার মধ্যে বায়ূ প্রতিবন্ধক হয়ে ছিল। আমি জোড়ে আওায দিলাম কিন্তু কেউ জবাব দিল না। তবে আমার সামনে দুইজন ঘোড়সওয়ার আসল যারা সাদা চাদর পরিহিত ছিল। তারা আমার প্রয়োজন জিজ্ঞাসা করল। আমি বললাম, আমরা সমুদ্র ভ্রমণ করছিলাম আর আমাদের (খাবার) পানির প্রয়োজন। তারা বলল, আপনি এই পথে চলুন, ওখানে আপনি একটি হাওয পাবেন। তবে মনে রাখবেন যে, হাওযে যা কিছুই দেখতে পাবেন তাতে ঘাবড়াবেন না। আব্দুল্লাহ বলেন, আমি তাদেরকে ঐ বন্ধ দরজার বাপারে জিজ্ঞাসা করলাম, যার মধ্যে হাওয়া প্রতিবন্ধক ছিল। তারা বলল, ঐ ঘরে মৃতদের রূহ আছে। আমি বের হয়ে গেলাম। যখন হাওযের কাছে গেলাম তখন এক ব্যক্তিকে দেখলাম যার মাথা লটকানো ছিল আর সে তার হাত দ্বারা পানি পান করতে চাইছিল, কিন্তু পান করতে পারছিল না। আমাকে দেখে সে আওয়ায দিল, হে আব্দুল্লাহ! (আল্লাহর বান্দা!) আমাকে পানি পান করাও। অমি তাকে হাতের অঞ্জলি দিয়ে পানি পান করানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু (অদৃশ্যভাবে) আমার হাত আটকে দেওয়া হল। সে বলতে লাগল, তোমার পাগড়ী ভিজিয়ে তা নিংড়িয়ে আমার গলায় দাও। আমি পাগড়ি ভিজিয়ে তার গলায় পানি নিংড়ানোর সময় আমার হাত আবার আটকে দেওয়া হল। অতঃপর আমি তাকে বললাম, হে আল্লাহর বান্দা! যা কিছু আমি করেছি তুমি দেখতে পেয়েছ। আমি আমার হাত দিয়ে পানি পান করানোর চেষ্টা করেছি তো আমার হাত থমকিয়ে দেয়া হয়েছে। অতঃপর পাগড়ী ভিজিয়ে পানি পান করানোর চেষ্টা করেছি তো আবার আমার হাত থমকিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন আমাকে বল যে, তুমি কে? সে বলল, আমি আদম (আ) এর সন্তান। পৃথিবীতে সর্বপ্রথম আমি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলাম।

ফিরআউন পরিবারের আযাব
৪৮. ইমাম আওযায়ী (রহ) বলেন, আমাকে এক ব্যক্তি আসকালানের সমূদপোকলে জিজ্ঞাসা করল যে, হে আবু আমর! আমরা কালো পাখি দেখলাম যে, সমুদ্র থেকে বের হয় আর যখন সন্ধ্যায় ফিরে তখন সাদা হয়ে যায়। তিনি বললেন, তোমরা বুঝতে পেরেছ? লোকেরা বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেন, শোন! এই পাখিগুলোর ভিতর ফিরআউন সম্প্রদায়ের রূহ আছে, যাদেরকে (সকাল-সন্ধ্যায়) আগুনে নিক্ষেপ করা হয় আর আগুন তাদেরকে ঝলসে দেয়। যার কারণে তাদের পালক কালো হয়ে যায়। তারা তাদের বাসায় ফিরে আসে আর তাদের নতুন করে পালক গজায়। এভাবে কিয়ামত পর্যন্ত চলতে থাকবে। অতঃপর (কিয়ামতের দিন) বলা হবে
أَدْخِلُوا آلَ فِرْعَوْنَ أَشَدَّ الْعَذَابِ
ফিরআউন সম্প্রদায়কে কঠিন আযাবে নিক্ষেপ কর।– সূরা মুমিন ৪৬

এক ব্যক্তির ঋণ অনাদায়ের শাস্তি
৪৯.শায়বান বিন হাসান বলেন, আমার পিতা এবং আব্দুল ওয়াহিদ বিন যায়দ যুদ্ধে যাওয়ার ইচ্ছা করলেন। সফরে তারা হঠাৎ একটি বৃহৎ পানিপূর্ণ গভীর কূপের নিকটে এসে পৌঁছলেন। তারা বালতির মধ্যে রশি বেঁধে তা কুয়ার মধ্যে নিক্ষেপ করলে বালতি খুলে কুয়াতে পড়ে যায়। অতঃপর রশি একে অপরের সাথে বেঁধে একজন কুয়াতে নামেন। সামান্য কিছু নামতেই সে তার মধ্য হতে কথা বলার আওয়ায শুনতে পেলেন। সে ফিরে এসে তার সাথিকে জিজ্ঞাসা করল, আমি যা শুনেছি তুমি কি তা শুনতে পেয়েছ? সে বলল, হ্যাঁ। অতঃপর সে নিজের সাথে লোহার ডান্ডা নিয়ে তার মধ্যে আবার যায়। সে এবার দেখল যে, একটি লোক কাঠের উপর বসে আছে আর তার নিচে পানি। সে জিজ্ঞাসা করল, তুমি কি জিন না ইনসান? সে বলল, আমি মানুষ। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কে? সে বলল, আমি ইন্তাকিয়ার অধিবাসী। আল্লাহ তাআলা আমার মৃত্যুর পর আমার ঋণের কারণে আমাকে এখানে আটকে রেখেছেন। ইন্তাকিয়ায় আমার ছেলে আছে, যে না তো আমাকে স্মরণ করে আর না আমার ঋণ পরিশোধ করে। সে তখন দ্রুত কুয়া থেকে বের হয়ে এসে তার সাথিকে বলল, এই যুদ্ধ আমরা আরেকটি যুদ্ধ শেষ করে করব। আমাদের সাথিদেরকে যেতে দিন (আমরা পরে যোগ দিব)। অতঃপর সে ইন্তাকিয়ার দিকে চলল, সেখানে সে ঐ ব্যক্তি আর তার ছেলের ব্যাপারে (একজনকে) জিজ্ঞাসা করল তো সেই লোকটি বলল, সে আমার পিতা। সে বলল, আমি আমাদের সম্পত্তি বিক্রি করেছি। আসুন আমার সাথে এখন আমার পিতার ঋণ পরিশোধ করি। এরা দুজন তার সাথে মিলে তার পিতার ঋণ পরিশোধ করলেন।
তারপর বলেন, যখন আমরা ইন্তাকিয়া শহর থেকে ফিরে ঐ কুয়ার নিকট আসলাম, তখন দেখলাম যে, না তো ঐ লোক আাছে আর না ঐ কুয়া। ওখানেই তাদের সন্ধ্যা হয়ে গেল। রাতের বেলা স্বপ্নে ঐ লোকটি তাদের দেখা দিল এবং বলল, আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে উত্তম বিনিময় দান করুন। তোমরা যখন আমার ঋণ পরিশোধ করেছ তখন আল্লাহ তআলা আমাকে এখান থেকে মুক্তি দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করিয়েছেন।

মূসা (আ) এর ঘটনা
৫০. উমর বিন সুলাইম বলেন, আমি আল্লাহর এই বাণী
وَاخْتَارَ مُوسَى قَوْمَهُ سَبْعِينَ رَجُلًا
আর মূসা তার সম্প্রদায়ের মধ্য হতে সত্তরজন লোককে নির্বাচন করল। সূরা আরাফ ১৫৫
প্রসঙ্গে মুহাম্মদ বিন কাব আল কুরুযী থেকে শুনেছি। তিনি বলেছেন মূসা (আ) সত্তরজন নেক ব্যক্তি নির্বাচন করেন এবং তাদেরকে নিয়ে চলেন। তারা জিজ্ঞাসা করলেন, আমাদেরকে নিয়ে কোথায় চললেন? মূসা (আ) বললেন, আমি তোমাদেরকে আমার প্রতিপালকের নিকট নিয়ে যাচ্ছি। তিনি আমার সাথে অঙ্গীকার করেছেন যে, তিনি আমার প্রতি তাওরাত নাযিল করবেন। তারা বলল, যে পর্যন্ত না অমরা আপনার প্রতিপালককে নিজ চোখে না দেখব, সে পর্যন্ত আমরা ইমান আনব না (আপনার এই কথায় বিশ্বাস করব না)। ঠিক সে সময় তাদের উপর বজ্রপাত হল আর তারা চেয়ে রইল। মূসা (আ) তাদের সামনে দাড়িয়ে রইলেন আরা তারা সকলে নিপতিত হলেন।
মূসা (আ) আরয করলেন,
رَبِّ لَوْ شِئْتَ أَهْلَكْتَهُمْ مِنْ قَبْلُ وَإِيَّايَ أَتُهْلِكُنَا بِمَا فَعَلَ السُّفَهَاءُ مِنَّا
ইয়া রব! আপনি চাইলে তাদেরকে পূর্বেই ধ্বংস করে দিতে পারতেন। আপনি কি নির্বোধদের জন্য আমাকে ধ্বংস করে দিবেন?-সূরা আরাফ ১৫৫
যখন আমার সাথে আগমনকারী কেউ আমার সাথে ফিরে যাবে না, আমি বনী ইসরাঈলকে কি জবাব দিব?
অতঃপর মুহাম্মদ ইবনে কাব তিলাওয়াত করেন-
ثُمَّ بَعَثْنَاكُمْ مِنْ بَعْدِ مَوْتِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
অতঃপর আমি তোমাদেরকে পূণরায় জীবিত করেছি যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।– সূরা আল বাকারা ৫৬
তখন তারা জীবিত হয়ে বলল, হে মূসা আমাদেরকে আপনার দিকে হিদায়াত করা হয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন যে, এভাবে ইহুদীরা এই শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে ইহুদী নামে পরিচিত হয়ে গেল

চলবে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button
error: Content is protected !!