কাসরুল আমাল- ইমাম ইবনে আবিদ দুনইয়া (রহ)
দারুস সাআদাত গ্রন্থ
গ্রন্থঃ কাসরুল আমাল
লেখক, ইমাম ইবনে আবিদ দুনইয়া (রহ)
অনুবাদঃ দারুস সাআদাত কর্তৃক সংকলিত ও অনূদিত
স্বত্বঃ দারুস সাআদাত কর্তৃক সংরক্ষিত, বিনানুমতিতে কপি করা, মূদ্রণ করা এবং এপে ব্যবহার করলে আইনত দণ্ডনীয়।
আশা আকাঙ্ক্ষা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। এর প্রয়োজনয়িতা যেমন রয়েছে তেমনি এর রয়েছে কূফলও। এ বিষয়ে গ্রন্থ প্রণয়ণ করেছেন প্রাচীন মুহাদ্দিস ইমাম ইবনে আবিদ দুনইয়া (রহ)। বাছাইকৃত অংশ পেশ করা হলো।
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
نَحْمَدُه وَنُصَلِّ عَلٰى رَسُوْلِهِ الْكَرِيْمِ
কাসরূল আমাল
তুমি যেন মুসাফির
[১] হযরত ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- একবার রাসূলুল্লাহ (সা) একপাশ থেকে আমাকে ধরে বললেন- হে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর!
كُنْ فِي الدُّنْيَا كَأَنَّكَ غَرِيبٌ، وَكَأَنَّكَ عَابِرُ سَبِيلٍ، وَعُدَّ نَفْسَكَ مِنْ أَهْلِ الْقُبُورِ
তুমি দুনিয়াতে এমনভাবে থাক যেন তুমি একজন অপরিচিত এবং পথচারী মুসাফির। আর তুমি নিজেকে কবরবাসী মনে করবে।
হযরত মুজাহিদ (রহ) বলেন- এরপর হযরত ইবনে উমর (রা) আমাকে বলেন, হে মুজাহিদ!
إِذَا أَصْبَحْتَ فَلَا تُحَدِّثْ نَفْسَكَ بِالْمَسَاءِ، وَإِذَا أَمْسَيْتَ فَلَا تُحَدِّثْ نَفْسَكَ بِالصَّبَاحِ، وَخُذْ مِنْ حَيَاتِكَ لِمَوْتِكَ، وَمِنْ صِحَّتِكَ لِسَقَمِكَ، فَإِنَّكَ يَا عَبْدَ اللَّهِ لَا تَدْرِي مَا اسْمُكَ غَدًا
তুমি যখন সকালে উপনীত হও তখন সন্ধ্যার চিন্তা করো না। আর যখন সন্ধ্যায় উপনীত হও তখন সকালের চিন্তা করো না। মৃত্যুর জন্য নিজের জীবন থেকে পুঁজি সংগ্রহ কর। অসুস্থতার পূর্বে সুস্থতাকে মূল্যবান মনে কর। কেননা হে আল্লাহর বান্দা! তুমি জাননা আগামীকাল তোমার কি নাম হবে (জীবিত না মৃত)।-[রিওয়ায়াত:১][1]
দুটি বিষয়ের ভয়
[২] হযরত আলী (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন-
إِنَّ أَشَدَّ مَا أَتَخَوَّفُ عَلَيْكُمْ خَصْلَتَيْنِ: اتِّبَاعَ الْهَوَى، وَطُولَ الْأَمَلِ. فَأَمَّا اتِّبَاعُ الْهَوَى فَإِنَّهُ يَعْدِلُ عَنِ الْحَقِّ. وَأَمَّا طُولُ الْأَمَلِ فَالْحُبُّ لِلدُّنْيَا
আমি তোমাদের ব্যাপারে যে দুটি বিষয়ের সবচেয়ে বেশী ভয় করি, তা হলো খাহিশাত বা প্রবৃত্তির অনুসরণ এবং দীর্ঘ আশা। প্রবৃত্তির অনুসরণ মানুষকে হক পথ থেকে সরিয়ে দেয় আর দীর্ঘ আশা জন্ম নেয় দুনিয়ার মহব্বত থেকে।
অতঃপর তিনি বলেন-
إِنَّ اللَّهَ يُعْطِي الدُّنْيَا مَنْ يُحِبُّ وَيُبْغِضُ. وَإِذَا أَحَبَّ اللَّهُ عَبْدًا أَعْطَاهُ الْإِيمَانَ
দুনিয়াতো আল্লাহ তাআলা ঐ ব্যক্তিকেও দান করেন যাকে পছন্দ করেন এবং তাকেও দান করেন যাকে পছন্দ করেন না। কিন্তু যখন আল্লাহ তাআলা কোন বান্দাকে মহব্বত করেন, তখন তাকে ইমান দান করেন।
أَلَا إِنَّ لِلدِّينِ أَبْنَاءً، وَلِلدُّنْيَا أَبْنَاءً. فَكُونُوا مِنْ أَبْنَاءِ الدِّينِ، وَلَا تَكُونُوا مِنْ أَبْنَاءِ الدُّنْيَا
শোন! কিছু লোক হয় দীনের জন্য আর কিছু লোক হয় দুনিয়ার জন্য। অতএব তোমরা তাদের মত হও, যারা দীনের জন্য হয়। আর তাদের মত হয়ো না, যারা দুনিয়ার জন্য হয়ে থাকে।
أَلَا إِنَّ الدُّنْيَا قَدِ ارْتَحَلَتْ مُولِّيَةً، وَالْآخِرَةَ قَدِ ارْتَحَلَتْ مُقْبِلَةً أَلَا وَإِنَّكُمْ فِي يَوْمِ عَمَلٍ لَيْسَ فِيهِ حِسَابٌ، أَلَا وَإِنَّكُمْ تُوشِكُونَ فِي يَومِ حِسَابٍ وَلَيْسَ فِيهِ عَمَلٌ
শোন দুনিয়া তোমাদের থেকে মুখ ঘুরিয়ে চলে যাচ্ছে আর আখিরাত (ক্রমে) সামনে আসছে। জেনে রাখ! তোমরা এমন দিনে আছ যেখানে আমল করতে হয়, হিসাব দিতে হয় না। অচীরেই এমন দিন আসবে যেখানে হিসাব দিতে হবে, আমল করা যাবে না।- [রিওয়ায়াত:৩][2]
দুনিয়া চলে যাচ্ছে আর আথিরাত সামনে আসছে
[৩] হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন-
إِنَّ أَخْوَفَ مَا أَخَافُ عَلَى أُمَّتِي: الْهَوَى وَطُولَ الْأَمَلِ فَأَمَّا الْهَوَى فَيَصُدُّ عَنِ الْحَقِّ. وَأَمَّا طُولُ الْأَمَلِ فَيَصُدُّ عَنِ الْآخِرَةِ
আমি অমার উম্মতের ব্যাপারে যে বিষয়ের সবচেয়ে বেশী ভয় করি, তা হলো খাহিশাত বা প্রবৃত্তির অনুসরণ এবং দীর্ঘ আশা। প্রবৃত্তির অনুসরণ মানুষকে হক পথ থেকে সরিয়ে দেয় আর দীর্ঘ আশা আখিরাত থেকে গাফিল করে দেয়।
وَهَذِهِ الدُّنْيَا مُرْتَحِلَةٌ. وَهَذِهِ الْآخِرَةُ قَادِمَةٌ، وَلِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا بَنُونَ، فَكُونُوا بَنِي الْآخِرَةِ وَلَا تَكُونُوا مِنْ بَنِي الدُّنْيَا، فَإِنَّكُمُ الْيَوْمَ فِي دَارِ الْعَمَلِ، وَأَنْتُمْ غَدًا فِي دَارِ جَزَاءٍ وَلَا عَمَلَ
দুনিয়া তো মুখ ঘুরিয়ে চলে যাচ্ছে আর আখিরাত (ক্রমে) সামনে আসছে। আর উভয়েরই সন্তান হয়। অতএব তোমরা আখিরাতের সন্তান হও, দুনিয়ার সন্তান হয়ো না। কেননা আজ তো তোমরা এমন স্থানে আছ, যেখানে আমল করতে হয়। আর কাল এমন স্থানে যেতে হবে, যেখানে আমলের বদলা বা প্রতিদান মিলবে কিন্তু আমল করা যাবে না।- [রিওয়ায়াত:৪][3]
যে আল্লাহকে লজ্জা করে
[৪] হযরত উম্মুল মুনযির থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক রাতে রাসূলুল্লাহ (সা) লোকদের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে বলেন-
أَيُّهَا النَّاسُ، أَمَا تَسْتَحْيُونَ مِنَ اللَّهِ؟ قَالُوا: وَمَا ذَاكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «تَجْمَعُونَ مَا لَا تَأْكُلُونَ، وَتَأْمُلُونَ مَا لَا تُدْرِكُونَ، وَتَبْنُونَ مَا لَا تَعْمُرُونَ
হে লোকসকল! তোমরা কি আল্লাহকে লজ্জা কর? লোকেরা বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহকে লজ্জা করার অর্থ কি? তিনি বললেন, তোমরা এমন জিনিস জমা কর যা ভোগ করতে পার না। এমন জিনিসের আকাঙ্ক্ষা কর যা লাভ করতে পার না। এমন বাড়ি নির্মাণ কর যেখানে চিরদিন থাকতে পার না।-[রিওয়ায়াতঃ৫][4]
উসামা ইবনে যায়দ (রা) এর বাসনায় রাসূলের বিস্ময়
[৫] হযরত আবু সাঈদ আল খুদরী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- হযরত উসামা ইবনে যায়দ (রা) একবার এক মাসের জন্য ১০০ দীনার দিয়ে একজন দাসী খরিদ করেন। তখন (এই সংবাদ শুনে) রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন- তোমরা কি উসামার বাপারে আশ্চর্যান্বিত হও না যে, সে এক মাসের জন্য ক্রয়-বিক্রয়ের লেনদেন করে? উসামা তো অনেক লম্বা আশাধারী।
কসম সেই সত্তার, যার হাতে আমার প্রাণ! যখনই আমি চোখের পলক ফেলি, তখনই মনে হয় হয়তো দ্বিতীয় পলক ফেলার পূর্বেই আমার রূহ কবয করে নেওয়া হবে। যখনই আমি চোখ উঠিয়ে দৃষ্টিপাত করি তখনই ভাবি যে, দ্বিতীয়বার দৃষ্টিপাত করার পূর্বেই আমার রূহ কবয করে নেওয়া হবে। আর যখনই কোন খাবারের লোকমা মুখে দেই তখনই মনে হয়, হয়তো লোকমা গিলে ফেলার পূর্বেই আমার রূহ কবয করে নেওয়া হবে।
অতঃপর বলেন, হে আদমের সন্তানগণ! যদি তোমাদের মধ্যে বুঝ-বিচেনা থাকে তবে নিজেকে মৃতদের মধ্যে গণ্য কর। কসম সেই সত্তার, যার হাতে আমার প্রাণ! তোমাদের সাথে যার অঙ্গীকার করা হয়েছে অর্থাৎ মৃত্যু তা অবশ্যই আসবে। আর তোমরা কোনভাবেই তা থেকে বাঁচতে পারবে না।-[রিওয়ায়াতঃ৬][5]
ওযুর পূর্বে তায়াম্মুম
[৬] হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন-
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ” كَانَ يُهْرِيقُ الْمَاءَ، فَيَتَمَسَّحُ بِالتُّرَابِ، فَأَقُولُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ الْمَاءَ مِنْكَ قَرِيبٌ؟، فَيَقُولُ «وَمَا يُدْرِينِي لَعَلِّي لَا أَبْلُغُهُ»
কখনো এমন হত যে, রাসূলুল্লাহ (সা) এর (ওযুর) জন্য পানির ব্যবস্থা করা হত। আর তিনি (আগেই) তায়াম্মুম করে নিতেন। আমি আরয করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! পানি তো নিকটে। তখন রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন- আমি জানি না, পানি পর্যন্ত পৌছতে পারব কি না।-[রিওয়ায়াতঃ৭][6]
টেকসই জিনিস ও নষ্ট হওয়া জিনিস
[৭] হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- নবী (সা) এক ব্যক্তিকে দেখলেন যে, সে তার জুতার ফিতা লোহা দ্বারা বানিয়ে নিয়েছেন (যাতে দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়)। এটা দেখে রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, আরে তুমি তো অনেক লম্বা আশাধারী এবং সওয়াব ও প্রতিদান প্রাপ্তির ব্যাপারে বেপরোয়া ভাব প্রদর্শনকারী আর নেককাজকে অপছন্দকারী। (জেনে রাখ!)
إِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا انْقَطَعَ شِسْعُهُ فَقَالَ: إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ، كَانَ عَلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ الصَّلَاةُ وَالْهُدَى وَالرَّحْمَةُ، فَذَاكَ خَيْرٌ لَهُ مِنَ الدُّنْيَا
যদি তোমাদের কারো জুতার ফিতা ছিঁড়ে যায় আর সে ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পাঠ করে, তবে এর বিনিময়ে তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে শান্তি ও নিরাপত্তা, হিদায়াত ও রহমত লাভ হয়ে থাকে- যা পুরো দুনিয়ার থেকে উত্তম।-[রিওয়ায়াতঃ৮][7]
মানুষ ও আশার দৃষ্টান্ত
[৮] হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- নবী (সা) তার মুবারক আঙ্গুলগলো যমীনের উপর রেখে বললেন-
هَذَا ابْنُ آدَمَ، وَهَذَا أَجَلُهُ مِنْ خَلْفِهِ، وَثَمَّ أَمَلُهُ، وَأَشَارَ بِيَدَيْهِ
এটা আদম সন্তান, আর তার পিছনে তার নির্ধারিত মৃত্যু । আর ঐ দিকে তার আশা-আকাঙ্ক্ষা। এটা বলতে বলতে রাসূলুল্লাহ (সা) তার হাত দিয়ে ইশারা করে যাচ্ছিলেন।-[রিওয়ায়াতঃ৯][8]
[৯] হযরত আবুল মুতাওয়াককিল থেকে বর্ণিত। (তিনি বলেন, একবার) নবী (সা) তিনটি লাকড়ি নিলেন। একটি লাকড়ি সামনে রাখলেন। দ্বিতীয়টি একপাশে রাখলেন। আর অপরটি একটু দূরে রাখলেন। অতঃপর বললেন, তোমরা কি জান এটা কি? সাহাবীগণ বললেন, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভাল জানেন।
রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন-
هَذَا الْإِنْسَانُ، وَهَذَا الْأَجَلُ، وَذَاكَ الْأَمَلُ، يَتَعَاطَاهُ ابْنُ آدَمَ وَيَخْتَلِجُهُ دُونَ الْأَمَلِ
এটা মানুষ। আর তার পাশে তার নির্ধারিত সময় (মৃত্যু)। আর ওটা তার আশা- আদম সন্তান এর তালাশে লেগে থাকে কিন্তু মাঝখানে তার নির্ধারিত সময় (মৃত্যু) এসে পড়ে।-[রিওয়ায়াতঃ১০][9]
[১০] হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে বুরায়দা তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নবী (সা) দুটি পাথর নিলেন আর তা আস্তে করে ছুঁড়ে মারলেন। অতঃপর বললেন-
هَذَا الْأَجَلُ، وَهَذَاكَ الْأَمَلُ
এটি মৃত্যু আর অপরটি হলো আশা-আকাঙ্ক্ষা।-[রিওয়ায়াতঃ১২][10]
মানুষ ও তার আশার মাঝে যা থাকে
[১১] হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে শিখখীর (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন-
مَثَلُ ابْنِ آدَمَ وَإِلَى جَنْبِهِ تِسْعٌ وَتِسْعُونَ مَنِيَّةً، إِنْ أَخْطَأَتْهُ الْمَنَايَا وَقَعَ فِي الْهَرَمِ
আদম সন্তানের দৃষ্টান্ত এমন যে, তার পাশে ৯৯টি মৃত্যু (বিপদ) ঘিরে রয়েছে। সে এসব মৃত্যু থেকে বেঁচে গেলেও অবশেষে বার্ধক্যে আক্রান্ত হয়ে যায়।-[রিওয়ায়াতঃ১৩][11]
[১২] হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- এটা আদম সন্তান। আর তার চারপাশে বিভিন্ন ধরণের বিপদ-মুসিবত ও মৃত্যু তাকে ঘিরে রয়েছে এবং তার দিকে ফণা তুলে ধরে আছে।
এসবের পিছনে রয়েছে বার্ধক্য আর তার পিছনে আশা আকাঙ্ক্ষা। মানুষ আশা আকাঙ্ক্ষার পিছনে পড়ে থাকে আর এসব বিপদাপদ তার পিছনে। যার প্রতি হুকুম হয় সে-ই মানুষকে ধরে বসে। যদি মানুষ এসব থেকে বেঁচেও যায় তথাপি বার্ধক্য এসে তার জীবনাবসান ঘটায়। আর তারপরও সে আশা-আকাঙ্ক্ষার জালে আটকে থাকে।-[রিওয়ায়াতঃ১৪][12]
[১৩] হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন –
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «مَثَّلَ الْإِنْسَانَ وَالْأَجَلَ وَالْأَمَلَ، فَمَثَّلَ الْأَجَلَ إِلَى جَانِبِهِ، وَالْأَمَلَ أَمَامَهُ، فَبَيْنَمَا هُوَ يَأْمُلُ، إِذْ أَتَاهُ أَجَلُهُ فَاخْتَلَجَهُ»
রাসূলুল্লাহ (সা) মানুষ, মৃত্যু ও আশা আকাঙ্ক্ষার দৃষ্টান্ত বর্ণনা করে বলেন– মানুষের একপাশে তার মৃত্যু আর তার সামনে আশা আকাঙ্ক্ষা। মানুষ আশা আকাঙ্ক্ষার জালে আটকে থাকে আর মৃত্যু তাকে গ্রাস করে নেয়।-[রিওয়ায়াতঃ১৭][13]
বয়সের সাথে আশা আকাঙ্ক্ষা বাড়তেই থাকে
[১৪] হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন-
يَهْرَمُ ابْنُ آدَمَ وَيَبْقَى مِنْهُ اثْنَتَانِ: الْحِرْصُ وَالْأَمَلُ
মানুষ বৃদ্ধ হয়ে যায়, কিন্তু তার দুটি জিনিস বাকী থেকে যায়- লোভ-লালসা ও আশা আকাঙ্ক্ষা।-[রিওয়ায়াতঃ১৮][14]
[১৫] হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন-
يَهْرَمُ ابْنُ آدَمَ، وَتَشِبُّ مِنْهُ اثْنَتَانِ: الْحِرْصُ عَلَى الْمَالِ، وَالْحِرْصُ عَلَى الْعُمْرِ
আদম সন্তান বৃদ্ধ হয়ে যায়, আর তার দুটি জিনিস জোয়ান থেকে যায়- সম্পদের লোভ এবং দীর্ঘ জীবনের আশা।-[রিওয়ায়াতঃ১৯][15]
নাজাত ও ধ্বংসের কারণ
[১৬] হযরত আমর ইবনে শুআইব থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন-
نَجَا أَوَّلُ هَذِهِ الْأُمَّةِ بِالْيَقِينِ وَالزُّهْدِ، وَيَهْلِكُ آخِرُ هَذِهِ الْأُمَّةِ بِالْبُخْلِ وَالْأَمَلِ
এই উম্মতের প্রথমদিকের লোকেরা (আল্লাহর প্রতি) ইয়াকীন এবং যুহুদ বা দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তির কারণে নাজাত লাভ করেছে। আর শেষ দিকের লোকেরা কৃপণতা এবং খাহিশাত বা আশা আকাঙক্ষার কারণে ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে।-[রিওয়ায়াতঃ২০][16]
একশ ত্রিশ বছর বয়সেও আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রবল থাকে
[১৭] হযরত আবু উসমান নাহদী (রহ) বলেন-
قَدْ بَلَغْتُ ثَلَاثِينَ وَمِائَةَ سَنَةٍ، فَمَا مِنِّي شَيْءٌ إِلَّا قَدْ عَرَفْتُ فِيهِ النُّقْصَانَ إِلَّا أَمَلِي، فَإِنَّهُ كَمَا هُوَ
আমার বয়স একশত ত্রিশ বৎসর হয়েছে। আর আমার ভেতরে এমন কিছু নাই যা দুর্বল হয় নাই। একমাত্র আমার আশা-আকাঙ্ক্ষা ব্যতীত- তা পূর্বের মতই রয়ে গেছে।-[রিওয়ায়াতঃ২১][17]
হযরত ইসা (আ) এর ঘটনা
[১৮] হযরত দাউদ ইবনে আবী হিন্দ এবং হুমায়দ বর্ণনা করেন। একবার হযরত ইসা (আ) পথ চলছিলেন। তখন দেখলেন, এক বৃদ্ধ লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষ করছে। তিনি তখন দুআ করলেন, হে আল্লাহ! আকাঙ্ক্ষা দূর করে দিন। তার মন থেকে আশা অতএব তখনই বৃদ্ধ ব্যক্তি হাত থেকে লাঙ্গল রেখে দিয়ে একপাশে শুয়ে পড়লেন। এর কিছুক্ষণ পর ইসা (আ) আবার দুআ করলেন- হে আল্লাহ! তার আশা আকাঙ্ক্ষা ফিরিয়ে দিন। অতএব তৎক্ষণাৎ বৃদ্ধ ব্যক্তি উঠে আবার জমি চাষ করতে লাগলেন।
হযরত ইসা (আ) ঐ বৃদ্ধকে জিজ্ঞাসা করলেন, কি ব্যাপার! আপনি কাজ করতে ছিলেন, মাঝখানে কাজ কেন বন্ধ করে দিলেন? বৃদ্ধ বলল, কাজ করতে করতে আমার মনে খেয়াল আসল যে, আর কত কাজ করব? কাজ করতে করতে বৃদ্ধ হয়ে গেলাম। অতএব এটা চিন্তা করে কাজ ছেড়ে দিয়ে শুয়ে পড়লাম। এরপর আবার মনে হলো, যে পর্যন্ত মৃত্যু না হবে, সে পর্যন্ত জীবন তো চালাতে হবে। আর জীবন চালানোর জন্য কাজ তো করতে হবে। অতএব এটা চিন্তা করে আমি পূণরায় কাজ করা শুরু করে দিলাম।-[রিওয়ায়াতঃ২২][18]
যদি গাফলত ও উদাসীনতা না হত
[১৯] হযরত হাসান থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন-
لَوْلَا السَّهْوُ وَالْأَمَلُ مَا مَشَى الْمُسْلِمُونَ فِي الطَّرِيقِ
যদি ভুল (উদাসীনতা) এবং আশা-আকাঙ্ক্ষা না হত তবে মানুষ পথে চলতে পারত না।-[রিওয়ায়াতঃ২৩][19]
[২০] হযরত হাসান থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন-
السَّهْوُ وَالْأَمَلُ نِعْمَتَانِ عَظِيمَتَانِ عَلَى ابْنِ آدَمَ
ভুল (উদাসীনতা) এবং আশা-আকাঙ্ক্ষা মানুষের জন্য বড় দুটি নিআমত।-[রিওয়ায়াতঃ২৪][20]
যদি মানুষ জানত তার মৃত্যু কবে হবে
[২১] হযরত মুতাররিফ ইবনে আব্দুল্লাহ (রহ) বলেন-
لَوْ عَلِمْتُ مَتَى أَجَلِي لَخَشِيتُ عَلَى ذَهَابِ عَقْلِي، وَلَكِنَّ اللَّهَ مَنَّ عَلَى عِبَادِهِ بِالْغَفْلَةِ عَنِ الْمَوْتِ. وَلَوْلَا الْغَفْلَةُ مَا تَهَنَّئُوا بِعَيْشٍ، وَلَا قَامَتْ بَيْنَهُمُ الْأَسْوَاقُ
যদি আমি জানতে পারতাম যে, আমার মৃত্যু কবে হবে, তবে আমার আকল নষ্ট হয়ে যেত। কিন্তু আল্লাহ তাআলা মানুষকে তাদের মৃত্যু থেকে গাফিল করে তাদের উপর অনেকে দয়া ও ইহসান করেছেন। যদি গাফলত ও উদাসীনতা না হত, তবে না মানুষ জীবন অতিবাহিত করতে পারত, আর না বাজার ইত্যাদি জমত।-[রিওয়ায়াতঃ২৫][21]
মানুষকে আহমক বানিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে
[২২] হযরত সুফিয়ান সাওরী (রহ) বলেন- আমি জানতে পেরেছি যে-
أَنَّ الْإِنْسَانَ خُلِقَ أَحْمَقَ لَوْلَا ذَلِكَ لَمْ يَهِنْهُ الْعَيْشُ
মানুষকে আহমক ও নির্বোধ করে সৃষ্টি করা হয়েছে। যদি এমন না হত, তবে জীবন অতিবাহিত করা নিদারুন কষ্টকর হয়ে যেত।-[রিওয়ায়াতঃ২৬][22]
[২৩] হযরত সাঈদ ইবনে আব্দুর রহমান জুমহী (রহ) বলেন-
إِنَّمَا عُمِّرَتِ الدُّنْيَا بِقِلَّةِ عَقْلِ أَهْلِهَا
দুনিয়ার বয়স স্বল্পবোধসম্পন্ন লোকদের ভিত্তিতে নির্ধারন করা হয়েছে।-[রিওয়ায়াতঃ২৭][23]
সালমান (রা) এর বিস্ময়
[২৪] হযরত সালমান ফারসী (রা) বলেন-
ثَلَاثٌ أَعْجَبَتْنِي، ثُمَّ أَضْحَكَتْنِي، مُؤَمِّلُ الدُّنْيَا وَالْمَوْتُ يَطْلُبُهُ. وَغَافِلٌ وَلَيْسَ بِمَغْفُولٍ عَنْهُ. وَضَاحِكٌ مِلْءَ فِيهِ وَلَا يَدْرِي أَسَاخِطٌ رَبُّ الْعَالَمِينَ عَلَيْهِ أَمْ رَاضٍ عَنْهُ
তিনটি ব্যাপারে আমি বিস্ময়বোধ করি এবং আমার হাসি পায়। দুনিয়ার অন্বেষী- মৃত্যু যার পিছনে ঘুরছে। ঐ গাফিল যে তার গাফলত থেকে বের হয় না। আর মুখ ভরে হাসিতে লিপ্ত ব্যক্তি। যে এটা জানে না যে, আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট না অসন্তুষ্ট।-[রিওয়ায়াতঃ২৯][24]
মৃত্যুর পর যে আমলটি কাজে আসে
[২৫] হযরত সালিহ আল বাররাদ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- আমি যাররাহ বিন আউফাকে তার মৃত্যুর পর স্বপ্নে দেখ জিজ্ঞাসা করলাম, (মৃত্যুর পর) আপনাদের ওখানে কোন আমলটি উত্তম পেয়েছেন? তিনি বললেন-
التَّوَكُّلُ، وَقِصَرُ الْأَمَلِ
আল্লাহর উপর ভরসা করা এবং আশা কম করা।-[রিওয়ায়াতঃ৩০][25]
[২৬] হযরত হাসান থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) সাহাবীদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন-
أَكُلُّكُمْ يُحِبُّ أَنْ يَدْخُلَ الْجَنَّةَ؟ قَالُوا: نَعَمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ، قَالَ: «قَصِّرُوا الْأَمَلَ، وَأَثْبِتُوا آجَالَكُمْ بَيْنَ أَبْصَارِكُمْ، وَاسْتَحْيُوا مِنَ اللَّهِ حَقَّ حَيَائِهِ
তোমরা কি সবাই জান্নাতে প্রবেশ করতে চাও? সাহাবীগণ বললেন, হ্যাঁ ইয়া রাসূলুল্লাহ! তখন নবী (সা) বললেন- তাহলে তোমরা আশা কম কর। নিজের শেষ সময়কে চোখের সামনে রাখ এবং আল্লাহকে লজ্জা কর যেভাবে তাকে লজ্জা করা দরকার।-[রিওয়ায়াতঃ৩১][26]
প্রকৃত যুহুদ
[২৭] হযরত সুফিয়ান (রহ) বলেন-
الزُّهْدُ فِي الدُّنْيَا قِصَرُ الْأَمَلِ، لَيْسَ بِأَكْلِ الْغَلِيظِ، وَلَا لُبْسِ الْعَبَاءِ
দুনিয়াতে (প্রকৃত) যুহুদ বা দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি হলো আশা কম করা। অতএব না খাবার সাধারণ হওয়া যুহুদ। আর না পোশাক নিম্নমানের হওয়া যুহুদ।-[রিওয়ায়াতঃ৩২][27]
কিছু আশা আকাঙ্ক্ষা থাকা বাঞ্ছনীয়
[২৮] হযরত মুহাম্মদ ইবনে মুয়াম্মার (রহ) বলেন-
سَأَلَ الْمُفَضَّلُ بْنُ فَضَالَةَ رَبَّهُ أَنْ يَرْفَعَ عَنْهُ الْأَمَلَ، فَذَهَبَ عَنْهُ الطَّعَامُ وَالشَّرَابُ. ثُمَّ دَعَا رَبَّهُ، فَرَدَّ عَلَيْهِ الْأَمَلَ، فَرَجَعَ إِلَى الطَّعَامِ وَالشَّرَابِ
হযরত মুফাযযল ইবনে ফাযালা (রহ) একবার আল্লাহর নিকট দুআ করেন যে, তার আশা-আকাঙ্ক্ষা যেন উঠিয়ে নেয়া হয়। তখন এই হলো যে, তার খাবার-দাবারের ইচ্ছা ও রুচি নষ্ট হয়ে গেল। এরপর তিনি আবার দুআ করলেন যে, তার আশা-আকাঙ্ক্ষা যেন ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তখন তার পূণরায় খাওয়া-দাওয়ার ইচ্ছা ও রুচি ফিরে এলো।-[রিওয়ায়াতঃ৩৩][28]
পূর্বসূরীদের আশা সংক্ষেপ করার চিন্তা
[২৯] হযরত দাউদ তাঈ (রহ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- আমি আতওয়ান ইবনে আমর আত তাইমী (রহ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, আশা কিভাবে সংক্ষেপ করা যায়? তিনি বললেন, এভাবে- যেভাবে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাঝে বিরতী হয়ে থাকে।
রুস্তম বলেন, এই কথাটি আমি হযরত ফুযায়ল ইবনে আয়ায (রহ) কে বললাম। তিনি এটা শুনে কাঁদতে লাগলেন এবং বললেন, সে শ্বাস-প্রশ্বাসের চিন্তা করে আর এই ভয় রাখে যে, তার নিঃশ্বাস না বন্ধ হয়ে যায়। আতওয়ান তো মৃত্যুকে অধিক ভয়কারী ছিল।-[রিওয়ায়াতঃ৩৪][29]
[৩০] হযরত মুহাম্মদ ইবনে সিমাক (রহ) বলেন-
مَا رَأَيْتُ أَحَدًا أَشَدَّ حَذَرًا لِلْمَوْتِ مِنْ عَطْوَانَ بْنِ عَمْرٍو
আমি আতওয়ান ইবনে আমর থেকে মৃত্যুকে অধিক ভয়কারী আর কাউকে দেখিনি।-[রিওয়ায়াতঃ৩৫][30]
তিনজন আলিমের ঘটনা
[৩১] হযরত হাসান বসরী (রহ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- একবার তিনজন আলিম একত্রিত হয়ে একে অপরকে বললেন, বল তোমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কি অবস্থা?
প্রথমজন বলল, যখনই নতুন মাস আগমন করে, তখন ভাবি যে এটা আমার জীবনের শেষ মাস। তখন বাকী দুইজন সাথি বলল, সত্যি অনেক বড় লম্বা আশা।
দ্বিতীয়জনকে জিজ্ঞাসা করলে বলল, যখনই একটি সপ্তাহ অতিবাহিত হয়, তখন ভাবি যে হয়তো সামনের সপ্তাহেই আমার মৃত্যু হয়ে যাবে। তখন বাকী দুইজন সাথি বলল, সত্যি তোমার আশাও অনেক লম্বা।
তৃতীয় সাথিকে জিজ্ঞাসা করা হলো, বল তোমার আশার কি অবস্থা। তিনি বললেন, ঐ ব্যক্তির কি আশাই থাকতে পারে, যার প্রাণটাও তার নিয়ন্ত্রণে নেই।-[রিওয়ায়াতঃ৩৬][31]
জীবন যার সহজ
[৩২] হযরত মালিক ইবনে মিগওয়াল (রহ) বলেন-
مَنْ قَصَرَ أَمَلُهُ هَانَ عَلَيْهِ عَيْشُهُ
যে ব্যক্তি নিজের আশাকে সংক্ষেপ করবে, তার জীবন সহজ হয়ে যাবে।
হযরত সুফিয়ান (রহ) বলেন- উদ্দেশ্য খাওয়া-পড়ার চাহিদাকে কম করা।-[রিওয়ায়াতঃ৩৭]
□ □ □ □ □
[1] . সহিহ বুখারী, কিতাবুর রিকাক, হাদীস:৬৪১৬।
[2] . কানযুল উম্মাল, হাদীস:৪৪১৬৭।
[3] . মিশকাতুল মাসাবীহ, কিতাবুর রিকাক, হাদীস:৫২১৪।
[4] . শুআবুল ইমান, রিওয়ায়াত:১০০৭৮।
[5] . হিলইয়াতুল আউলিয়া, ৬ষ্ট খণ্ড, পৃ:৯১।
[6] . মুসনাদে আহমদ, হাদীস:২৬১৪।
[7] . তাফসীর আদ দুররে মানসূর, সূরা আল বাকারা:১৫৫।
[8] . সুনানে তিরমিযী, আবওয়াবুয যুহুদ, হাদীস:২৩৩৪।
[9] . কিতাবুয যুহুদ লি ইবনে মুবারক (রহ), রিওয়ায়াত:২৫৪।
[10] . শুআবুল ইমান, রিওয়ায়াত:৯৭৭৭।
[11] . সুনানে তিরমিযী, আবওয়াবুল কদর, হাদীস:২১৫০।
[12] . ইহইয়াউ উলুমুদ্দীন।
[13] . সুনানে তিরমিযী, আবওয়াবুয যুহুদ, হাদীস:২৩৩৪।
[14] . মুসনাদে আহমদ, হাদীস:১২৭২১।
[15] . সুনানে তিরমিযী, আবওয়াবুয যুহুদ, হাদীস:২৪৫৫।
[16] . আত তারগীব ওয়াত তারহীব লিল মুনযিরী (রহ), কিতাবুত তওবা হাদীস:৫০৬১।
[17] . বায়হাকী আয যুহুদুল কাবীর, রিওয়ায়াত:৬২১।
[18] . ইহইয়াউ উলমুদ্দীন।
[19] . ইহইয়াউ উলমুদ্দীন।
[20] . হিলইয়াতুল আউলিয়া, ৬ষ্ট খণ্ড, পৃ: ১৬৪।
[21] . ইবনুল জাওযী, সিফাতুস সাফওয়া।
[22] . ইতহাফুস সাদাতুল মুত্তাকীন।
[23] . ইতহাফুস সাদাতুল মুত্তাকীন।
[24] . যুহুদে আহমদ, রিওয়ায়াত:৮৩৭।
[25] . ইতহাফুস সাদাতুল মুত্তাকীন।
[26] . তাখরীজ আহাদীসে ইহইয়া, কিতাব যিকরুল মাউত, হাদীস:২।
[27] . বায়হাকী আয যুহুদুল কাবীর, রিওয়ায়াত:৪৬৬।
[28] . হিলইয়াতুল আউলিয়া, ৮ম খণ্ড, পৃ:৩৩১।
[29] . সিফাতুস সাফওয়া।
[30] . সিফাতুস সাফওয়া।